পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ঢাকার হোটেলগুলোতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যারা অবস্থান করছেন তাদের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেওয়া কিংবা নতুনদের গমনাগমনের বিষয়ে তথ্য পেতে কাজ করছে র্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার হোটেলগুলোতে তল্লাশি শুরু করে র্যাব। এ সময় হোটেলের রেজিস্টার চেকসহ সন্দেহ হলে প্রয়োজনে কক্ষে গিয়ে বোর্ডারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তারা।
র্যাব-২ এর অপারেশন অফিসার এএসপি মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল (২৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার হোটেলগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
হোটেলের আগন্তুকদের বিষয়ে নিশ্চিত হতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, হোটেলে কোনো সন্ত্রাসী বা সন্দেহজনক কেউ অবস্থান করছে কিনা তা নিশ্চিত হতেই এ তল্লাশি। আমরা অবস্থানরতদের নাম-ঠিকানা যাচাই করছি। কোনো দুষ্কৃতিকারী যেন সেখানে অবস্থান নিতে না পারে সেজন্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আশঙ্কা করছিলাম ৩০ তারিখের নির্বাচন ঘিরে বহিরাগত কিংবা অনভিপ্রেত কেউ হোটেলগুলোতে অবস্থান করতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই হোটেলগুলোতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
সেখাকে কতজন বোর্ডার রয়েছেন, তাদের নাম ঠিকানা যাচাইসহ তারা কেন এসেছেন কিংবা কতোদিনের জন্য এসেছেন, তাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা বিষয়গুলো নিশ্চিত হচ্ছি আমরা।
এদের মধ্যে কোনো বোর্ডারকে সন্দেহজনক মনে হলে কক্ষে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। হঠাৎ করে কেউ চলে আসলো কিনা বিষয়গুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। এছাড়া বোর্ডারদের বিষয়ে হোটেল মালিকদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
চলছে বিশেষ টহল
এদিকে নির্বাচন ঘিরে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে বিশেষ টহল অব্যাহত রেখেছে র্যাব। নির্বাচন পর্যন্ত এ টহল চলমান রাখার কথাও জানিয়েছে বাহিনীটি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় র্যাবের এই বিশেষ টহল দেখা গেছে।
র্যাব-২ এর অপারেশন অফিসার এএসপি মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আমাদের বিশেষ টহল চলমান রয়েছে। এছাড়া আমাদের নির্ধারিত এলাকার মধ্যে নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
র্যাব-৩ এর অপারেশন অফিসার এএসপি বীনা রানী দাস বাংলানিউজকে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এবং জনমনে আস্থা তৈরিতে র্যাবের এই বিশেষ টহল কার্যক্রম চলমান থাকবে।
দুপুরে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, দেশজুড়ে র্যাবের ১০ হাজার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৫৭টি বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ৪টি হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। যার মাধ্যমে দেশের যে কোনো প্রান্তে কোনো গোষ্ঠী সহিংসতার দুঃসাহস দেখালে দ্রুততম সময়ে বিশেষ প্রশিক্ষিত স্পেশাল ফোর্স সদস্যদের পাঠানো হবে।
এছাড়া বোমা নিষ্ক্রিয় দল দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুত থাকবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা কার্যক্রমও অব্যাহত রাখার কথাও জানিয়েছেন র্যাব প্রধান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
পিএম/এএ