রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোড় ও সিগন্যাল ছাড়াও গণপরিবহনের একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
রাজধানীর বনানী সিগন্যাল, বেশ ব্যস্ত একটি সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিমান বন্দর সড়কের বনানী সিগন্যালের দক্ষিণ পাশে ফুটওভার ব্রিজের পাশেই রয়েছে সুন্দর পরিপাটি বাস-বে এবং যাত্রী ছাউনী। কিন্তু সেখানে থামে না কোনো বাস। সিগনালের উত্তর অংশ থেকেই যাত্রী ওঠানামা করায় এই সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন গণপরিবহন।
এছাড়াও চলন্ত অবস্থায়ও বাসে ওঠানামা করছেন যাত্রীরা। এতে জীবনের ঝঁকি ছাড়াও বিঘ্ন ঘটে স্বাভাবিক যান চলাচলে। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।
বনানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিত্র আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বনানী সিগন্যালের কাছে এলে বাইক চালাতে খুব সমস্যা হয়। হঠাৎ করেই বাস থেকে যাত্রী নেমে বাইকের সামনে এসে যায়। আবার অনেকে আকস্মিক ফুটপাথ থেকে দৌড় দেয় বাসে ওঠার জন্য। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা। অনেক দুর্ঘটনা ঘটছেও।
তিনি বলেন, যাত্রীরা তো আছেই। চালকরাও নির্দিষ্ট স্পপেজে বাস থামায় না। তারা অন্য গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য রাস্তার মাঝেই আড়াআড়িভাবে থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। যা কোনো মতেই কাম্য নয়।
তবে চলন্ত গাড়ি থেকে ওঠা-নামার জন্য উল্টো যাত্রীদের দায়ী করে বিমান বন্দর সড়কে চলাচলকারী ভূঁইয়া পরিবহনের চালক মতিন আলী বলেন, আমরা তো বাস-বে’তেই বাস থামাতে চাই। কিন্তু সিগন্যাল দিলে যাত্রীরা এই সিগন্যালেই নামতে চায়। বাস-বে পর্যন্ত যাওয়ার ধৈর্য নাই। আবার তখন গেট খুললে অনেক যাত্রী উঠে পরে। ওইখানে (বাস-বে) যাওয়ার আগেই বাস ফিল-আপ হয়ে যায়। তাই আর সেখানে বাস থামাই না।
এদিকে নির্দিষ্ট স্টপেজে বাস থামানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশের জোরালো ভূমিকা আশা করেন যাত্রীরা। বনানীর একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা সায়মা শিকদার বলেন, বাসগুলোতে নির্দিষ্ট জায়গায় যাত্রী ওঠা-নামা করানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশকে আরও কঠোর হতে হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের দৌড়ে বাসে ওঠতে হয়। আর নারী হলে তো ভোগান্তির আরও সীমা নেই। অনেক সময় (বাসে) ওঠাও যায় না।
তবে পুলিশ বলছে, বাসগুলো বাস-বে’তে থামতে চাইলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। বনানী সিগন্যালে দায়িত্বরত সার্জেন্ট সাকিন হাসান অপু বাংলানিউজকে বলেন, কোনো বাস সেখানে থামতে চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে তো নিষেধ নেই। বরং বাসগুলো রানিং অবস্থাতেই যাত্রী তোলে। আমরা মাঝে মাঝে এমনটা দেখলে ব্যবস্থা নিই। ‘সব যাত্রী যদি নিজেরাই বে’তে গিয়ে দাঁড়ান তাহলে তো বাসগুলো সেখানেই থামাতে বাধ্য হয়। এখানে যাত্রীদের সচেতনতা দরকার। ’
জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ‘ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট' (কেস) প্রকল্পের আওতায় দুই সিটিতে যাত্রী ছাউনী সংস্কার এবং কোথাও নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। বাস থামানোর নির্দিষ্ট বে’ও করে দেওয়া হয়েছে।
কেস প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বনানী বাস’বের যাত্রী ছাউনি আমরা নতুন করে বানিয়ে দিয়েছি। কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। যা এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে।
যাত্রী ছাউনী এবং বাস-বে ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
এসএইচএস/এমএ