ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘যত মতপার্থক্য হোক, বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশেই হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২০
‘যত মতপার্থক্য হোক, বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশেই হবে’ বক্তব্য রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

গাজীপুর: যত মতপার্থক্য হোক, বাংলাদেশেই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাবলিগ জমাতের লোকজনের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও তারা সুন্দরভাবে এক জায়গায় ইজতেমা করবেন, সে ব্যাপারে তারা একমত। তারা অভিমত প্রকাশ করেছেন এবারও যেভাবে প্রস্তুতি হয়েছে, যেভাবে কাজ চলছে, সুন্দরভাবে ইজতেমা সম্পন্ন হবে।

তারা দু-একটি সমস্যার কথা যা বললেন, এগুলো আমরা অবশ্যই নিরসন করার চেষ্টা করবো। যত মতপার্থক্য হোক, বাংলাদেশেই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান চত্বরে ৫৫ তম বিশ্ব ইজতেমার অগ্রগতি বিষয়ক অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ অন্যরা।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরও বলেন, ইজতেমায় আসা অতিথিদের যেন কোনো কষ্ট না হয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের তালিকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে তা যাচাই-বাছাই করে তাদের ভিসা দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের ডিবি মো. বেনজীর আহমদ, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, তাবলিগের দুই পক্ষের পাঁচজন করে ১০ জন মুরুব্বিসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।

বিদেশি মেহমানদের ভিসা বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিসার একটি নিয়মনীতি আছে, এর মধ্যে থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার সেটুকু আমরা করবো। এ ব্যাপারে ইতোপূর্বে মন্ত্রণালয়ে ইজতেমার মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সুনিশ্চিত হয়েছি যে, এখানে আমাদের পুলিশ প্রশাসন থেকে আরম্ভ করে  যারা আছেন সবাই পরিশ্রম করবেন। আমাদের সিটি করপোরেশন তারা যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন। প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ইজতেমার শেষ দফা পর্যন্ত তারা সহযোগিতা করবেন। এখানে আর কোনো অসুবিধা হবে না। ধর্মপ্রাণ মানুষের ইজতেমা আসা-যাওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমাদের পুলিশ প্রশাসন সেটাও নজরে রাখবেন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, এবারও বিদেশি মেহমানদের ভিসা জটিলতা যাতে না হয়, তার জন্য তিনি তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এছাড়া ইজতেমা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেছেন, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত দূরদর্শী নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্ব ইজতেমা দেখে উপলব্ধি করে টঙ্গীতে বড় জায়গার ব্যবস্থা করে গেছেন। বিশ্বের মুসলমানেরা ইজতেমার নাম অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে নেন। গত বছর সবার চেষ্টায় ইজতেমার দু’পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তির পর একস্থানে এক প্যান্ডেলের নিচে ইজতেমা সম্পন্ন করা হয়েছে। এবার কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার আওয়াজ পাইনি। আশা করছি, এবারের ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইজতেমায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। ইজতেমা উপলক্ষে সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমদ জানান, তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। তারা ইজতেমায় আকাশ পথে, স্থলে ও তুরাগ নদে টহলের ব্যবস্থা করবেন। তারা মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবাসহ আখেরি মোনাজাতের পর টঙ্গী থেকে মহাখালী পর্যন্ত মুসল্লিদের পৌঁছে দিতে শ্যাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা করবেন।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ সব ধরনের কাজ সম্পন্নের পর ৫ জানুয়ারি ইজতেমা মাঠ বুঝিয়ে দেবে। তাদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, মশক নিধন, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, ২৪টি অবজারভেশন টাওয়ার নির্মাণ, ১০ প্লাটুন বিজিবি, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন, দুইটি হেলিপ্যাড নির্মাণসহ সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গী জংশনে প্রতিটি ট্রেন পাঁচ মিনিট করে যাত্রাবিরতি করবে।  

মুসল্লিদের টঙ্গীর ইজতেমায় যাতাযাতের জন্য চারশটি বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চারটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর তিনটি গ্রিড ব্যবহার করা হবে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দুইটি হট লাইনসহ ৫০টি টেলিফোন স্থাপন করা হয়েছে।  

গাজীপুর মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ইজতেমাস্থল ও আশ-পাশে এলাকায় তিনটি সেক্টরে বিভক্ত হয়ে পর্যাপ্ত পুলিশ ও সাদা পোশাকে নিরাপত্তা দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
আরএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।