ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চুরির অভিযোগে যুবককে নির্যাতন, উদ্ধার করলো পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২০
চুরির অভিযোগে যুবককে নির্যাতন, উদ্ধার করলো পুলিশ

নাটোর: নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় ব্যাটারিচালিত ভ্যান চুরির অভিযোগ এনে মনিরুল ইসলাম (১৮) নামে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে।সেই নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। 

এ অবস্থায় ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে। পরে ভ্যান চুরির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দয়ারামপুর বাজার এলাকায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।  

নির্যাতনের শিকার মনিরুল ইসলাম উপজেলার মাছিমপুর মহল্লার মো. আব্দুল গাফফারের ছেলে।  

স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে দয়ারামপুর এলাকার মিশ্রিপাড়া গ্রামের মাহাতাব সরদার নামে একজনের জানাজা নামাজের আয়োজন চলছিল। সেখান থেকে একই এলাকার আলমগীর হোসেনের ভ্যান চুরি হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন মনিরুল ইসলামকে চোর সন্দেহে আটক করে।
  
পরে তাকে দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবনের সামনে লাম্পপোস্টের খুঁটির সঙ্গে হাত পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। আর সেই ছবি মুহূর্তেই ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে পুলিশ এসে মনিরুলকে উদ্ধার করে।  

উদ্ধারকারী বাগাতিপাড়া মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. তারেকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মনিরুলকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্মাণাধীন ভবনের কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাকে স্থানীয়রা মারধর করেছেন বলে স্বীকার করেন। মনিরুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি।  

দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুর রহমান মিঠুর কাছে জানতে চাইলে তিনি  নির্যাতনের কথা জানেন না বলে জানান।  

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, মনিরুল বেলা ১১টার দিকে ভ্যান চুরির সময় জনতার হাতে আটক হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুপুরে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। পরে বিকেলের দিকে 
ভ্যানের মালিক আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে চুরির মামলা দায়ের করেন।  

ওই মামলার ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে তাকে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। এমনকি তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকেও নির্যাতনের বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি বলে জানান ওসি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাগাতিপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি অ্যাডেভোকেট সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় সচেতন মানুষের দ্বারা একজন অপরাধীকে আইনে সোপর্দ না করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। আইন সবার জন্য সমান, তাই আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।