এসব তথ্য কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সূত্রে জানা গেছে। অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ১৫ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে রাতে ঝটিকা অভিযানে গত এক সপ্তাহে অবৈধ বন্ডেড পণ্য পরিহনকালে কভার্ড ভ্যান থেকে আটক পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিকস, কাগজ, সুতা, পিপি দানা, কেমিক্যালস, বিওপিপি ফিল্ম, জুতা ইত্যাদি।
উক্ত যানবাহন থেকে আটক পণ্যের মোট বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায়যোগ্য শুল্ক-করাদির পরিমাণ ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আটক পণ্যের বিপরীতে ন্যায় নির্ণয়ন চলমান রয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের বন্ডিং কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রদত্ত কাস্টমস বন্ড সুবিধার অপব্যবহার প্রতিরোধে, শুল্ক-করাদি আহরণ এবং দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনায় গত প্রায় এক বছর ধরে নিয়মিতভাবে বিশেষ প্রিভেন্টিভ অভিযান পরিচালনা করছে এ দপ্তর। অভিযানের আওতায় বন্ড প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক পরিদর্শন, বিশেষ অনুসন্ধান ও নিরীক্ষা, অবৈধ মজুদস্থলে হানা, অবৈধ পণ্যবাহী যানবাহন আটক, বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা দায়ের প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে ২০১৯ সালে পরিচালিত মোট ২১৫টি অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বন্ডেড পণ্য উদ্ধারের বিপরীতে ১১টি ফৌজদারি মামলাসহ ১৭৫টি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় জড়িত শুল্ক করাদির পরিমাণ প্রায় ২২৫ কোটি টাকা। এছাড়াও শুল্ক-করাদি ফাঁকির অভিযোগ এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মোট ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স সাসপেন্ডসহ বিন লক করা হয়েছে।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা বিগত বছরের তুলনায় অগ্রগামী অবস্থানে রয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে একশ’ ৭৫ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ সময়ে আদায় হয়েছিল একশ’ ৩৯ কোটি ৪৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। ফলে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ২৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
এ বিষয়ে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, বন্ড সুবিধার অপব্যবহার নির্মূল করতে হবে। সে লক্ষ্যে অবৈধ বন্ডেড পণ্যের উৎস, মাধ্যম এবং গন্তব্য চিহ্নিত করে সর্বত্র এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর পুরনো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ বন্ডেড পণ্যের চোরাই বাজার গড়ে উঠার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনায় কমিশনার, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকার তত্ত্বাবধানে এসব অভিযানের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
সংঘবদ্ধ এসব চোরাকারবারি চক্রের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঝুঁকি এবং প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেও অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। গত এক বছরে উপ/সহকারী কমিশনারের নেতৃত্ব গঠিত অন্তত: ১০ টি প্রিভেন্টিভ টিম কর্তৃক রাজধানীর ইসলামপুর, সদরঘাট, উর্দু রোড, নয়াবাজার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এর টানবাজার, নরসিংদীর মাধবদী, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি প্রভৃতি এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে পুলিশ ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
জিসিজি/জেআইএম