ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হাসপাতালে ৪ মাস ধরে ভর্তি অন্তঃসত্ত্বা কে এই নারী?

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
হাসপাতালে ৪ মাস ধরে ভর্তি অন্তঃসত্ত্বা কে এই নারী?

লালমনিরহাট: দীর্ঘ চার মাস ধরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিচয় খুঁজছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ চার মাস আগে সন্ধ্যায় লালমনিরহাট হাসপাতালের ভেতরের গেটের সামনে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর শুয়ে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন সিনিয়র স্টাফ নার্স চামেলী বেগম। পরে কয়েক দিন চিকিৎসার পরে নিরুদ্দেশ হলেও পুনরায় হাসপাতালে ফিরে আসেন ওই নারী।

বর্তমানে সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার গাইনি ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও চিকিৎসকরা অনেকভাবে তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

হাসপাতালে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি তাকে আর্থিকভাবে ওষুধ ক্রয়সহ অন্য সহায়তা করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে, ওই নারী গর্ভবতী হয়েছেন। আগামী মার্চ মাসে তিনি সন্তান প্রসব করবেন বলে আল্ট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন।

ওই নারী কথা কম বললেও নিজের পরিচয় দিতে ভয় পাচ্ছেন। কখনোই তিনি নাম বা পরিচয় বলেন না। সবার কথা বুঝতে পেলেও কোনো উত্তর দেন না। তবে সমাজসেবা কর্মীদের ধারণা, বড় ধরনের কোনো মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আতঙ্কিত হয়ে ওই নারী মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় এখন দরকার তার পরিবারের আপনজনের পরিচর্যা। তার পরিচয় শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হলে মানসিকভাবে তাকে সুস্থ করা যাবে। তাই তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে সমাজসেবা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী অবিবাহিত অথবা সদ্য বিবাহিত ধারণা করে সমাজসেবা তার পরিচয় শনাক্তে এবং তার সমস্যা জানতে নারী সমাজকর্মী নিয়োগ করে উপযুক্ত কাউন্সিলিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

লালমনিরহাট হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স চামেলী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে গেটে শুয়ে থাকা ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করেছি। তিনি মার্চে সন্তান প্রসব করতে পারেন। নিবিড় পরিচর্যা করা হচ্ছে। তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। কথা খুবই কম বলেন। কিছু বললে হাসি দেন। কারও ক্ষতি করেন না। কেউ স্বেচ্ছায় কিছু না দিলে যতই প্রয়োজন হোক, নেন না। কেউ তাকে চিনে থাকলে হাসপাতালে যোগাযোগ করার অনুরোধ।

হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা এরশাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের বাইরে ওষুধ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এমনকি পোশাকও সরবরাহ করা হচ্ছে সমাজসেবার মাধ্যমে। বড় ধরনের মানসিক আঘাতের কারণে ওই নারীর এ অবস্থা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা নারী সমাজকর্মী দিয়ে কাউন্সিলিং করে তার পরিচয় বের করার চেষ্টা করছি। যতদিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলবে, ততদিন তাকে সহায়তা করবে সমাজসেবা।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।