রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) আইন-২০২০’ পাসের জন্য উত্থাপিত বিলে বিএনপির সংসদ সদস্যের বক্তব্যের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
বিএনপির দুই সংসদ সদস্য বিলের ওপর আলোচনা অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা (এমপি) বলেন, ভোটার তালিকা করার প্রয়োজন নেই।
বিএনপির দুই এমপির বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিরোধী দলের সংসদ সদস্য যা বলেছেন আমি এতে আশ্চর্য হইনি। একদম আশ্চর্য হইনি। উনাদের (বিএনপি) তো ভোট করার অভ্যাস নাই।
‘উনারা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেন, তাতেও খুশি না। উনারা করলেন, এককোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। তারা তো এই কথা বলবেন-ই। তারা ভুয়া ভোটারেও সন্তুষ্ট না। উনারা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটার ছাড়া নির্বাচন করলেন। খুনিদের ওইখানে বসান। এই হচ্ছে ওনাদের নিয়ম কানুন। ’
আইনমন্ত্রী বলেন, তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংসদে বসান। এই হচ্ছে ওনাদের আইন কানুন। উনারা আইনের দীক্ষা দিচ্ছেন। এজন্য উনাদের ধন্যবাদ দিই। তবে আমরা জনগণের কথা বলি। স্বার্থ দেখি। ১৯৮২ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই আইনটা ২০০০ সালে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে। আমরা আইনে প্রণয়ন করছি।
‘আপনারা (বিএনপি সংসদ সদস্য) ভাঙা রেকর্ডারের মতো পুরনো কথা বলেন। তারা তো অ্যানালগ, ডিজিটাল না। ’
এর আগে অধিবেশনে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রয়োজন হয় যখন মানুষ ভোট দিতে পারে। যে দেশে দিনের ভোট রাতে হয়, ভোটে পুলিশ প্রশাসন, ক্যাডার বাহিনী, যে দেশের মৃত মানুষেরাও এসে ভোট দেয়! যে দেশে খুশিতে ঠেলায় ভোট দিতে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ায়, সেই দেশে ভোটার তালিকা থাকা বা না থাকা কী আসে যায়? সেটা বুঝে আসে না।
‘এছাড়া ক্ষমতাসীনদের আস্থাভাজন ছাড়া যেহেতু প্রায় কেউ-ই ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারে না, সেহেতু ভোটার তালিকায় তাদের নাম নির্ভুলভাবে না আসলেই চলে। তাই জনগণের করের টাকা বাঁচাতে মানুষ যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে অলীক স্বপ্নে আশাহত না হয় এমনই প্রেক্ষাপটে হালনাগাদ দূরে থাকুক আদৌ প্রয়োজন আছে কি-না, সেটা জনমত যাচাই করা হোক। ’
বিএনপির অপর সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ভোটার তালিকার প্রয়োজনটা কী? আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- এটার জন্যই তো ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। হালনাগাদ করে আমাদের কী হবে? যদি নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে না পারে!
`ভোটাররা তালিকার হালনাগাদের বিষয়ে জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন আছে। নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত আইন করছে, বিধিবিধান করছে, এগুলো কী আমরা মানছি? আপনারা (ক্ষমতাসীন দল) চাচ্ছেন এভাবেই নির্বাচন করা হবে, এভাবেই নির্বাচনী কার্যক্রম চলবে, এভাবে নির্বাচনী উৎসব চলবে?’
তিনি বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনে রীতিমতো যুদ্ধ হচ্ছে। দুই দল দুই প্রার্থীর মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নীরব প্রশাসন নীরব, কেউ কোনো কাজ করছে না। আইন প্রণয়ন বাদ দেন, দেশ যেভাবে ফ্রি স্টাইলে চলছে এভাবে একদলীয়ভাবে দেশ চালানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
এসকে/এমএ