বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শামসুল ইসলামকে আদালতে পাঠানো হয়। বিকেলে রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে শামসুলের।
গত ২৪ জানুয়ারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে শামসুলকে আটক করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা সরানোর কথা স্বীকার করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে শামসুল ইসলামে জানান, গত দুই বছর ধরে নানা সময়ে ব্যাংকের ভল্ট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়েছেন তিনি। ওইসব টাকা দিয়ে আইপিএল, বিপিএলসহ বিভিন্ন খেলায় অনলাইনে বাজি ধরতেন শামসুল।
কিন্তু মাঝে মাঝে জিতলেও বেশিরভাগ সময়ই হারতেন তিনি। আর এভাবেই অনলাইনে জুয়া খেলে ব্যাংক থেকে সরানো টাকাগুলো হেরেছেন বলে জানান শামসুল।
ওসি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফায়সাল জানান, ব্যাংকের ভল্টে সবসময়ই প্রায় ১৫ কোটির মতো টাকা থাকতো। ভল্টের সামনের সারির টাকা ঠিক রেখে পেছনের সারি থেকে তিনি টাকা সরাতেন। ফলে দীর্ঘদিন কারো নজরেই টাকা সরানোর বিষয়টি আসেনি বা কেউ সন্দেহ করেনি।
এরই এক পর্যায়ে গত ২৪ জানুয়ারি ভল্টের সব টাকা হিসেব করা হয়। তাতে ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা কম পাওয়া যায়। এ সময় শামসুলকে ধরা হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনেই তিনি ভল্ট থেকে টাকা সরানোর কথা স্বীকার করেন।
তবে প্রথমে তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানান যে, কিছু টাকা দুই বন্ধুকে ঋণ হিসেবে দিয়েছেন আর কিছু টাকা ব্যবসার লাগিয়েছেন কাজে। সে সময় টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য সময়ও প্রার্থনা করেন ফায়সাল। কিন্তু সার্বিক প্রেক্ষাপটে তার কথায় আস্থা না রেখে ওই দিন রাত ১২টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী শাখার জোনাল ম্যানেজার সেলিম রেজা খান বাদী হয়ে শামসুলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন। পরদিন সকালে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত শামসুলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে বিস্তারিত জানান ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
এসএস/এইচজে