ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উহান থেকে ফিরেছেন ৩১৪ বাংলাদেশি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০
উহান থেকে ফিরেছেন ৩১৪ বাংলাদেশি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (ডিজি-৭০০১) উহান থেকে তাদের নিয়ে আসে।

ঢাকা: চীনের উহান শহর থেকে ৩১৪ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে এনেছে সরকার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে বিআরটিসির দুটি এসি বাস ও বিমানবন্দরের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ১৪ দিনের জন্য পৃথক অবস্থায় তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এ সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে পরিবারসহ কেউই দেখা করতে পারবে না।

শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে (বিজি-৭০০২)  করে ৩১৪ বাংলাদেশিকে উহান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছে ১২ শিশু ও তিনজন নবজাতক।

বিআরটিসির দুটি এসি বাস ও বিমানবন্দরের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে শুক্রবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, চীনে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এছাড়া ১৭টি দেশে এ রোগ ছড়িয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশে এ রোগের কোনো প্রভাব নেই। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সন্দেহজনক একজন ভর্তি রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, সেটা শেষ হলেই বোঝা যাবে।

মন্ত্রী বলেন, চীনের উহান থেকে প্রায় ৩১৪ জন বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা আমরা করেছি। এখানে যারা ফেরত আসছেন, আমাদের জানা মতে তারা কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তারপরও তারা পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তাদের প্রথমে আশকোনার হজ ক্যাম্পে রাখা হবে। সেখানে তারা ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকবেন। এসময় তারা পরিবারের সদস্যসহ কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা নিয়মিত খবরা-খবর পৌঁছে দেবো।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি-৭০০২) উহানে যায়। এতে চারজন ডাক্তার, পাইলট ছাড়াও ১১ জন কেবিন ক্রু, চারজন ককপিট ক্রু, দুজন প্রকৌশলী ছিলেন বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

পর্যবেক্ষণের ১৪ দিনের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের এসে দেখা করতে না চাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদেশ ফেরতদের দেখার জন্য আত্মীয়-স্বজনরা ব্যাকুল হবে সেটাই স্বাভাবিক। আমি অনুরোধ করবো কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন না, তারা কেউ কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আত্মীয়-স্বজনদের উদ্দেশ্যে একই মন্তব্য করে বলেন, চীন ফেরত এ বাংলাদেশিদের সঙ্গে স্বজনরা দেখা করার জন্য যেন উঠেপড়ে না লাগে। সেদিকে আপনারা লক্ষ্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সংবেদনশীল। তিনি এ ভাইরাসে আক্রান্তদের কথা শুনে অনেক আগে থেকেই বলছেন বাংলাদেশিদের ফেরত নিয়ে আসতে। এর আগে চীন সরকার আমাদের বলেছিল ১৪ দিনের আগে তাদের ফেরত দেওয়া যাবে না। অবশেষে গতকাল সন্ধ্যায় তারা জানিয়েছে, ফেরত দেওয়া সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন তাদের ফেরত আনতে। আমরা খুব অল্প সময়ে সব কিছু প্রস্তুত করেছি। এ থেকেই আমরা বুঝতে পারছি, বাংলাদেশের ক্যাপাসিটি আছে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী চীনে পড়াশোনার জন্য অবস্থান করে। এর মধ্যে উহানে ২২টি ইনস্টিটিউটে আমাদের শিক্ষার্থীরা রয়েছে। সেখানকার সবাই আবার আসতে চায়নি। এদের মধ্যে শুধু যারা আসতে চেয়েছেন, তাদেরই আমরা আনার ব্যবস্থা করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২০
টিএম/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।