ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাবনায় গৃহবধূ ঐশি হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২০
পাবনায় গৃহবধূ ঐশি হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ মানববন্ধন

পাবনা: স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর আওতাপাড়া গ্রামে ঐশি খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার পর গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে।  

এ হত্যার ঘটনায় সকাল থেকে পাবনা ঈশ্বরদী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রর্দশন করে এলাকাবাসী।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পরিবারে সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে ঐশির মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয় ঐশি। ঘটনার পর ঐশির বাবার বাড়ির লোকজন স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্বামীর পরকীয়া প্রেমের কথা জেনে যাওয়ার কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে জাহিদ। ঐশির আট মাস বয়সী জান্নাত নামে এক মেয়ে রয়েছে।  

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, পরিবার ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় আমরা বিছানায় পেয়েছি। তার গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিলো। তাকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মগোপন করেছে বলে জানা গেছে। যতদূর শুনেছি ছেলেটির অন্য মেয়ের সঙ্গে সস্পর্ক রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে জানা যাবে।

এ ঘটনার পরে শনিবার রাতে নিহত গৃহবধূ ঐশির মা সাহানারা বেগম বাদী হয়ে মেয়ে জামাইসহ তার পরিবারের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।  

ঐশির মা সাহানারা বেগম জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে ঘরামি হারুনের ছেলে জাহিদের সঙ্গে ঐশির বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য নগদ টাকা দেওয়া হলেও বিয়ের পর থেকেই আবারো যৌতুকের জন্য ঐশির ওপর নির্যাতন করতো শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে প্রায় ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তারও কিছুদিন পরে আবার ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে জাহিদকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া হয়। এর কিছুদিন আগে আমার মেয়ে জানতে পায়, তার স্বামীর স্বভাব চরিত্র ভালো না। এ নিয়ে প্রায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে জাহিদের মানি ব্যাগে এক নারীর ছবি দেখে ঐশি প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে।

বিষয়টি ঐশি আমাদের জানালে শনিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে আমার ভাইয়ের ছেলে অমিত ওই বাড়িতে ঐশিকে আনতে যায়। এসময় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাধা দেয়। অমিত তাদের বাড়ি থেকে চলে আসার পর জাহিদ মোবাইলে অমিতকে গালিগালাজও করে। তারপর শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলার কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যায় বাড়িতে খবর পাঠায় ঐশি গলায় ফাঁস নিয়ে মারা গেছে। এসময় আমরা তাদের বাড়ি গিয়ে ঐশিকে খাটের ওপর অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে দ্রুত পাবনা হাসপাতালে নিয়ে গেল ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করেন। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ওরা আমার সহজ সরল মেয়েটিকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।