গাইবান্ধা: ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নবাসী। নদীবেষ্টিত এ ইউনিয়নের পুরো এলাকা জুড়েই চলছে ভাঙন।
নদীভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে চরাঞ্চলের এ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় ভাঙনের ভয়াবহতা। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙনের কবলে পড়া নদী তীরবর্তী অনেক পরিবার সাধ্যমত তাদের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, গাছপালা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
ভাঙনের কবলে পড়া উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলো হলো, ওই ইউনিয়নের বাজে চিথুলিয়া, চিথুলিয়া দিগর, মাইজবাড়ী, সিধাই, কাচির চর, উত্তর মোল্লার চর, দক্ষিণ মোল্লার চর এবং মৌলভীর চর এলাকা জুড়ে চলছে ব্যাপক নদী ভাঙন।
ওইসব এলাকায় বিস্তৃর্ণ ফসলিজমি- বসতবাড়ির পাশাপাশি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, কালভার্ট, কমিউনিটি ক্লিনিক, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এবতেদায়ী মাদ্রাসা।
বাজে চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যুধিষ্টীর বর্মণ বাংলানিউজকে জানান, এ বিদ্যালয়ে মোট ৭৭ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতো। নদী ভাঙনে পরিবারগুলো অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কমতে থাকে। গত জুলাই মাসের ২৪ তারিখে বন্যায় তার বিদ্যালয়ের ভবনটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যালয়টি এক কিলোমিটার দূরে পাশের একটি চরে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় কতোজন শিক্ষার্থীর পরিবার অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছে নিশ্চিত করে সে সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।
মোল্লারচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি কমার পর এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে একের পরএক বসতবাড়ি-ফসলিজমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। অথচ ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মোল্লারচর ইউনিয়ন পুরোটাই নদী বেষ্টিত হওয়ায় সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকারিভাবে নদী খননের কাজ শুরু হলে তখন ভাঙন কিছুটা কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২০
এনটি