টানা ৯ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকার কোনাপাড়া বহুতল ভবনের লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিটের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে মাতুয়াইল কোনাপাড়া বাদশা মিয়া রোড এলাকায় একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ধাপে ধাপে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালায়।
ভবনের ৬তলা থেকে ১০ তলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০ তলা ওই ভবনের ৬ তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিভেনঞ্জ বাংলানিউজকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে চেষ্টা চালিয়ে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে এই ঘটনার কোনো হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
ওই ভবনের কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবনটি একটি আবাসিক ভবন। কিন্তু ভবনের ষষ্ঠ তলায় ওয়্যার হাউজের সব ধরনের মালামাল মজুদ রাখা হয়েছে। ওই ভবনের ছিল একটি লাইটার ফ্যাক্টরি। গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে প্রতিটি তলায় লাইটার তৈরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ওয়্যার হাউজের মালামালে বোঝাই ছিল। ৬ তলায় থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং তার মুহূর্তেই ভবনের ওপরে ১০ তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে থাকা মালামালের মধ্যে বেশিভাগই ছিল দাহ্য পদার্থ। এতে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কাজ করতে খুব বেড় পেতে হয়েছে। কারণ বহুতল ভবন হলেও কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিলো না। পুরো ভবনে প্রবেশ ও বাহিরের জন্য একটি মাত্র সিড়িপথ রাখা ছিলে। নিয়ম অনুযায়ী ভবনের বাহির পাশে এক্সিট পথ থাকার কথা থাকলেও সেটি ছিল না।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে ভবনের ৬ তলায় আগুনের সূত্রপার ঘটতে পারে। তবে তদন্তের পরই আগুন লাগার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় বেশি লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে ১০ তলা পর্যন্ত পুরোটি ছিলো গোডাউন। সেখানে ওয়্যার হাউজের মালামাল (লাইটার তৈরির কাচামাল) মজুদ রাখা ছিল। সেগুলো সবই আগুনে জ্বলতে দেখা গেছে। ভবনটি ছিল আবাসিক। কিন্তু সেটি বাণিজ্যিকভাবে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ভবনটিতে কোনো প্রকার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিলো না। যার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২০
এসজেএ/এমএমএস