ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরগুনায় বরফ সংকটে বিপাকে জেলেরা 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২০
বরগুনায় বরফ সংকটে বিপাকে জেলেরা  ট্রলারে অলস সময় পার করছেন জেলেরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: ২২ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সাগরে যাত্রা শুরু করেছে উপকূলের জেলেরা। বুধবার (৪ নভেম্বর) রাত ১২টার পর থেকেই সারিবদ্ধভাবে ট্রলারগুলো সাগরে যাত্রা করে।

 

তবে বরাবরের মতো এবারও ট্রলারের চাপ পড়ায় বরফ উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে বরফ কলের মালিকরা। চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সময় বরফ না পাওয়ায় বিপাকে পরেছেন জেলেরা।  

বরগুনার তালতলীর ফকিরহাটের অন্যতম মৎস্য বন্দরে বরফ সংকটে ঘাটে শতাধিক ট্রলার নোঙর করে আছে। ঘাটে বসে অলস সময় পার করছেন শতাধিক মাছ ধরা ট্রলারের শ্রমিকরা। বরফ কলের মালিকরা বলছেন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ভোল্টেজ কম থাকার কারণে বরফ উৎপাদনে বিঘ্ন হচ্ছে। এদিকে উৎপাদন কম হওয়ায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বরফ। প্রতিটি ক্যান বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫শ টাকা। অন্যসময় প্রতিটি ক্যান বিক্রি হয় মাত্র ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়।  


তবে পাথরঘাটার চিত্র একটু ভিন্ন। ট্রলার মালিকরা বলছেন পাথরঘাটায় প্রায় ৩০টির বেশি বরফ কল থাকায় চাহিদা অনুযায়ী বরফ দিতে না পারলেও সংকটে পড়তে হয়নি।  

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ৪ নভেম্বর রাত ১২টার পর থেকে ইলিশ শিকারের জন্য গভীর সাগরে যেতে শুরু করে বরগুনার উপকূলের প্রায় ৩৬ হাজার জেলে। তবে বরগুনার তালতলীতে নিষেধাজ্ঞার ২ দিন পার হলেও সাগরে যেতে পারছে না এখানকার প্রায় শতাধিক জেলে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ শিকার না করে দীর্ঘ ২২ দিন অলস সময় কাটিয়েছেন জেলেরা। এই সময়কালে মাত্র ২০ কেজি চাল দিয়ে চলেছে তাদের সংসার। এই ২২ দিন অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কেটেছে জেলেদের।  

স্থানীয় জেলে শামিম, হাসেম আলীসহ একাধিক জেলে বলেন, কোনোরকম জাল নিয়ে সাগরে যাওয়ার জন্য ট্রলার প্রস্তুত রেখেছি। কিন্তু বরফ নিতে না পারায় দুই দিনেও সাগরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘাটে অসংখ্য মাছ ধরা ট্রলার বসে আছে। এই দুইদিনেও বরফ পাইনি তবে আজ যদি না পাই তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের। এমনিতেই ২২ দিন অনেক কষ্ট করে পরিবার নিয়ে ছিলাম। এখন বরফ না থাকায় ইলিশের ভরা মৌসুমেও সাগরে যেতে পারছিনা। বরফ কলের মালিকরা বলছেন বিদ্যুৎ যায় আর আসে তাই ঠিকমত বরফ তৈরি করতে পারছেন না, এজন্যই বরফ দিতে পারছেন না। যা দিচ্ছেন তাও এখন চড়া দামে বিক্রি করছেন মিল মালিকরা। তবে বরফ কলের মালিকরা বলছেন আজ রাতে বা আগামীকাল সকালে বরফ কিছুটা হলেও দেওয়া যাবে।

ফকিরহাটের হাওলাদার আইসপ্লানের মালিক আল আমিন বলেন, বিদ্যুৎ যায় কয়বার তা বলা যাবে না, বরং থাকে কতটুকুন সময় সেটি বলা যায়। বিশেষ করে বরফ তৈরির সঠিক সময়েই বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেশি হয়। ভোল্টেজ অনেক কম। এর কারণে বরফ উৎপাদন বিঘ্ন হচ্ছে। তাই বরফ দিতে পারছি না।  

চড়া দামের বিষয়ে তিনি বলেন, এই মৌসুমে বরফের চাহিদা থাকে তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করি। এখানে মাত্র দুইট আইসমিল রয়েছে। এই ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বরফের চাহিদার তুলনায় এখানে সে পরিমাণ বরফ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।  

পাথরঘাটা উপজেলা বরফ কলের মালিক সমিতির সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখনো বরফ সংকটের মতো পরিস্থিতি হয়নি। তবে বিদুৎ লোডশেডিং এর কারণে সংকট হতে পারে। চাহিদা অনুযায়ী ক্যাপাসিটি আমাদের আছে।

এদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া প‌ল্লি বিদ্যুৎ স‌মি‌তির ডিজিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কোনো সুযোগ নেই। তালতলীতে আগে ভোল্টেজ কম ছিলো। তার জন্য আমরা ভোল্টেজ বেশি পাওয়ার জন্য তিনটি ভোল্টেজ মেশিন বসিয়েছি। এটা বরফ কল মালিকদের মন গড়া কথা। তবুও আমি আগামীকাল ঘটনাস্থালে যাবো বিষয়টি দেখার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।