রাজশাহী: রাজশাহীতে টোল আদায়ের নামে গোদাগাড়ী ও কাটাখালি পৌরসভার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত টোলের প্রায় চারগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে প্রথম রাজশাহীর বালুমহাল চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা কার্যক্রম শুরু করে। ওই বছর রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সভায় বালুবাহী ট্রাক থেকে টোল নির্ধারণ করা হয় সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা। যা এখনও বলবৎ রয়েছে।
চলতি বছর রাজশাহীর ৭টি বালুমহাল ইজারা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে দু’টি, পবার কাটাখালি পৌরসভা এলাকায় একটি, চারঘাটে একটি ও বাঘায় ৩টি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের টোল আদায়ের এ নির্দেশনা মানছেন না গোদাগাড়ী ও কাটাখালি পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু ও আব্বাস আলী। তারা ট্রাক প্রতি ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত টোল নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ দুই মেয়রের বেঁধে দেওয়া নিয়মে ইজারাদাররা জোরপূর্বক ট্রাক থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ট্রাক মালিক বলেন, আমার ৩টি ড্রাম ট্রাকসহ ৯টি ট্রাকে প্রতিদিন বালু পরিবহন করা হয়। প্রতিবার বালু আনতে গেলে ড্রাম ট্রাকে ২৫০ টাকা এবং সাধারণ ট্রাক থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কাটাখালি পৌরসভায় আব্দুল হান্নান ও গোদাগাড়ীতে আনারুল বিশ্বাস নামের দুইজন টোল আদায় করেন।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত এ টোল আদায়ের প্রতিবাদ করলে ইজারাদাররা ট্রাকের চালক ও সহকারীদের মারধর করেন। গত ৩১ অক্টোবর রাতে গোদাগাড়ীতে ট্রাক থেকে ২৫০ টাকা টোল নেওয়ার প্রতিবাদ করার ইজারাদারের লোকজন ট্রাকের ড্রাইভার ও সহকারীকে মারধর করেছে।
প্রশাসনের নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু বলেন, আনারুল বিশ্বাস নামের একজন পৌর টোল আদায়ের ইজারা নিয়েছে। বড় ট্রাক ২৫০ টাকা ও মাঝাড়ি ট্রাকের ২০০ টাকা টোল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ইজারাদার টোল আদায় করছে।
তবে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
কাটাখালি পৌরসভায় টোল আদায়কারী আব্দুল হান্নান বলেন, কাটাখালির চর শ্যামপুর বালুঘাটে ট্রাকের টোল আদায়ের জন্য ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৫ টাকায় ইজারা দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। আমার নামে ইজারা হলেও এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ২০ জন। ইজারার ২৫ শতাংশ পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর নিজের। বাকি ৭৫ ভাগ ১৯ জনের। পৌরসভা থেকে ট্রাক প্রতি ২০০ টাকা করে টোল আদায় করার জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শাহানা আখতার জাহান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩গ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২০
এসএস/ওএইচ/