নোয়াখালী: নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী থেকে তুলে নিয়ে তরুণীকে (১৯) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাতভর মারধরের ঘটনায় তার সাবেক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরো তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
আটক ইসমাইল হোসেন বাপ্পী (২৯) কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামের মো. ইউসুফের ছেলে।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় আসামিকে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সাবেক স্বামীসহ ৪ জনকে আসামি করে ভুক্তভোগী সুধারাম থানায় মামলা করলে বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতেই সাবেক স্বামীকে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন জানান, সাবেক স্ত্রীর মামলার আলোকে অভিযুক্ত সাবেক ইসমাইল হোসেন বাপ্পীকে গ্রেফতারের পর বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজ কর্মস্থল জেলা শহর মাইজদীর গ্রীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাইজদীস্থ হরিণারায়পুরের বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষানবিশ ওই নার্স। মাইজদী পেট্রোল পাম্পের সামনে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এসময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সামনে এসে দাঁড়ালে তিনি গন্তব্যে যাওয়ার জন্য উঠে পড়েন। পরে ওই গাড়িটি একটু সামনে গেলে দুজন যাত্রী সামনের সিটে ওঠেন। আর একটু সামনে গেলে তার সাবেক স্বামী ও আরও একজন ভিকটিম দুপাশে উঠে বসেন। অটোরিকশায় ওঠার পর থেকেই তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তার সাবেক স্বামী বাপ্পী ও তার সহযোগী রহিম (২৪)। চোখ-মুখ চেপে ধরে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যান তাকে। অটোরিকশা থেকে নামানোর পর বুঝতে পারেন এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পির বাড়ি। ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই নেই। ঘরে ঢুকিয়েও বেদম মারধর করেন তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় জলন্ত সিগারেটের আগুনে মুখমণ্ডলে ছ্যাঁকা দেওয়া ও অপর দুইজনসহ ধর্ষণের চেষ্টা করে কিন্তু নির্যাতন সহ্য করে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পান ওই তরুণী। ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকলে সে সুযোগে পালিয়ে মাইজদী চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেন তিনি। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই রাতেই চাচার সহায়তায় মামলা করেন থানায়।
স্বজনরা জানান, ছোটবেলায় বাবাকে হারান ওই ভিকটিম, নতুন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তার মা। অভিভাবক শূন্য হয়ে নানির কাছেই বড় হন তিনি। নবগ্রামে নানির কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পির নজরে পড়েন তিনি। বাপ্পি অনেকটা জোর করে অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই নানা কারণে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হতো তাকে। মারধর করতেন শাশুড়ি, ননদ ও দেবর। দুই মাস আগে তাদের ডিভোর্স হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২০
আরএ