ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২০
বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ ছবি: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং

ঢাকা: স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।

শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আসেম (দ্য এশিয়া-ইউরোপ মিটিং) অর্থমন্ত্রীদের ১৪তম সভার উদ্বোধনী সেশনে ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশা করছি, বিশ্ব খুব শিগগির কোভিড-১৯ এর কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে। এসব ভ্যাকসিন অবশ্যই সব দেশের জন্য সহজলভ্য করতে হবে, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উদারতা নিয়ে এগিয়ে আসার প্রয়োজন।

কোভিড-১৯ মহামারি সংকট মোকাবিলায় সুসমন্বিত রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বে বহুমাত্রিক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এটিকে বৈশ্বিক ভাবেই মোকাবিলা করা উচিত। এ সংকট মোকাবিলায় আমাদের একটি সুসমন্বিত রোডম্যাপ প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেইল আউটের (bail out) হাত থেকে রক্ষার জন্য রাজস্ব প্রণোদনা, কনসেশনাল ফাইন্যান্স এবং ঋণ উপশম (debt relief measures) সুবিধা দিতে জি-৭, জি-২০, ওইসিডি দেশগুলো, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ডিউটি-ফ্রি ও কোটা-ফ্রি বাজার সুবিধা এবং প্রযুক্তি সহায়তায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।

বিভিন্ন দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা নয় সহযোগিতাই যেকোনো সংকট মোকাবিলা করতে পারে। এই কঠিন সময়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে আমাদের আরও বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন।

করোনা মহামারিতে সারা বিশ্বে সৃষ্ট স্থবিরতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ সব দেশের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মারাত্মক ধাক্কা দিয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ চাকরি হারিয়েছে, আয় উপার্জন বন্ধ। দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেক্টর কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো।

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অর্থনৈতিক প্যাকেজ গ্রহণ করার পরও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় কোভিড-১৯ প্রভাব ফেলছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

করোনা সংকট মোকাবিলায় ১৪ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ হাতে নেওয়ার করার কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

মহামারির শুরুর কয়েকমাসের ধাক্কার পর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রপ্তানি, প্রবাস আয়, কৃষি উৎপাদনসহ অন্যান্য সূচকের ঊর্ধ্বমূখীতা বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জার্মানি, স্পেন, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ আসেম ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ-এর প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২০
এমইউএম/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।