ঢাকা: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই জাতীয় চিড়িয়াখানার টিকিট কাউন্টারগুলোতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘলাইন দেখা যায়।
দর্শনার্থীরা জানিয়েছেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি শিশুদের একটু বিনোদন দিতে ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে তারা এসেছেন চিড়িয়াখানায়। তবে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিহিত অবস্থায় সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
একইসঙ্গে প্রবেশের সময় কোনো দর্শনার্থীদের খাদ্যসামগ্রী বিশেষ করে বাদাম, চিপস অন্যান্য পলিযুক্ত খাবার নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। চিড়িয়াখানার পরিবেশের কথা চিন্তা করেই এমনটি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর থেকে ঘুরতে আসা মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সকালে চাঁদপুর থেকে রওয়ানা হয়ে সরাসরি চিড়িয়াখানায় এসেছি। বছরখানেক আগেও আমি একবার এসেছিলাম। সে সময়ের চেয়ে এখনকার পরিবেশ অনেক ভালো। প্রবেশের সময় সঙ্গে বাদাম নিয়েছিলাম কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে পানি নিয়ে প্রবেশ করেছি।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও বের হয়নি। একটু বিনোদন দিতে ঘরবন্দি শিশুদের নিয়ে শনিবার চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এলাম বলে জানালেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় সাত থেকে আট মাস শিশুরা ঘরবন্দি। স্কুল বন্ধ, আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ও তেমন যাওয়া হয় না। তাই দুই সন্তান ও পরিবারকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এলাম। অনেক দিন পর শিশুরা ঘর থেকে বের হয়েছে, ভালোই আনন্দ পাচ্ছে। করোনার কারণে দীর্ঘ সাত মাস ১০ দিন পর বন্ধ থাকার পর চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত হওয়ায় দর্শনার্থীদের রেকর্ড পরিমাণ ভিড় হচ্ছে বলে জানালেন বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. আব্দুল লতিফ।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস করোনার কারণে জাতীয় চিড়িয়াখানা বন্ধ ছিল। এই দীর্ঘসময় বন্ধ থাকার কারণে শিশুরা বিনোদন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই এটি উন্মুক্ত হওয়ার পর রেকর্ড পরিমাণ দর্শনার্থী প্রতিদিন চিড়িয়াখানায় ভিড় করছেন। শুক্রবারও (৬ নভেম্বর) প্রচুর ভিড় ছিল শনিবারও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এই ভিড়ের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে বলছি। একইসঙ্গে আমরা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের জন্য ১২টি স্থানে ব্যবস্থা করেছি এবং আমরা মাইকে ঘোষণা করছি ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি, নো মাস্ক নো টিকিট’। শুধু তাই নয় আমি নিজেও ঘুরে দেখেছি ৯৫ শতাংশ মানুষের মুখের মাস্ক রয়েছে এবং বাকি ৫ শতাংশ মানুষেরও হাতে ও পকেটে মাস্ক রয়েছে।
তবে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে ও তার কোনো বিকল্প নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২০
এসএমএকে/এএটি