ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাগেরহাটে বিধবার জমি দখলের ‘পাঁয়তারা’ 

এস.এস শোহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২০
বাগেরহাটে বিধবার জমি দখলের ‘পাঁয়তারা’  উল্লাসিনি।

বাগেরহাট: বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বিঘাই এলাকায় উল্লাসিনি সরকার (৬৩) নামে এক বিধবার জমি দখল করে নেওয়ার ‘পাঁয়তারা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে।

নিজের জমি রক্ষা করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।

এছাড়া এই জমি নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে।

অন্যদিকে ওই স্বজনরা বলেছেন, উল্লাসিনি যার কাছ থেকে জমি কিনেছেন, তার সঙ্গে মামলায় জিতে তারা ওই জমি পেয়েছেন। তারপরও তাকে আমরা থাকতে দিচ্ছি।  

ভুক্তভোগী উল্লাসিনি বলেন, আমি বেতাগা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আয়া পদে চাকরি করতাম। আমার বেতনের টাকা দিয়ে বিঘাই মৌজায় সাত কাঠা জমি কিনি। আমার স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র ছেলে তুষার সরকারও ঢাকায় থাকেন। কিন্তু আমার প্রতিবেশী জোৎসনা তরফদার এবং আমার নিকটাত্মীয় আশিষ তরফদার, অরুণ তরফতদার, আরতি তরফদার, প্রবাস হালদারসহ কয়েকজন আমার এই জমি দখলের জন্যে উঠেপড়ে লেগেছে। আমাকে নানাভাবে তারা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি শান্তিপূর্ণভাবে আমার জমি ভোগ দখল করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছেও অভিযোগ করেছি। থানায়ও অভিযোগ করেছি তাদের বিরুদ্ধে। তারা আমার কথা শুনেছেন। সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন।

উল্লাসিনির প্রতিবেশী তপন বিশ্বাস বলেন, উল্লাসিনি তার ক্রয়কৃত জমিতে বসবাস করেন। কিন্তু এই জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে বলে জানি। উল্লাসিনি একটু মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তার কথাবার্তা শুনলে মনে হয় মানসিক ভারসাম্যহীন।

এ ব্যাপারে ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাস বলেন, উল্লাসিনি একজন অসহায় নারী। বেতাগা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পর আমি তাকে ভাতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। তিনি আমার কাছে জমি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। উল্লাসিনি নিজ জমিতেই অবস্থান করছেন।

তিনি আরও বলেন, উল্লাসিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর থেকে একটু মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি অনেক সময় অসামঞ্জস্যপূর্ণ কথাবার্তা বলেন। তার ছেলে তুষারের সঙ্গে আমার কথা হয়। তবে সে জানিয়েছে তার মায়ের তেমন কোনো সমস্যা নেই।

অভিযোগ অস্বীকার করে আশিষ তরফদার বলেন, উল্লাসিনি বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, তার ছেলেও ভবঘুরে। তিনি মারা গেলে তার এই জমি তো আমরাই ভোগ-দখল করবো। সেক্ষেত্রে এখনই দখল করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

অভিযোগ আছে, আপনারা নাকি তাকে মাঝে মধ্যেই ভয়ভীতি দেখান? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, উল্লাসিনি সরকার আমাদের পিসি হন। তিনি যে জমিতে থাকেন ওই জমিটি আমাদেরই। তিনি যার কাছ থেকে জমি কিনেছেন, তার সঙ্গে মামলায় জিতে আমরা জমিটা পেয়েছি। কিন্তু পিসি ওই জমিতে থাকলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ তিনি তো আমাদের পিসি। আমরা তাকে কোনোরকম বিরক্ত করি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।