নীলফামারী: মাদকাসেবী ছেলের অত্যাচার সইতে না পেরে তাকে ইট ছুড়ে হত্যা করেছেন এক বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন রেল কলোনি বস্তিতে।
শনিবার (৭ নভেম্বর) গভীর রাতে ছেলে হত্যার ওই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ মেলে। শহরের গোলাহাট রেলকলোনি বস্তিতে বসবাস করেন মো. ভলু (৬০)। পেশায় তিনি একজন রিকশাচালক।
তিনি অভিযোগ করেন, গত একমাস আগে তার মাদকাসেবী ছেলে মা-বাবাকে ঘর থেকে বের করে দেন । সে থেকে তিনি স্ত্রীসহ পাশের উত্তরা আবাসন এলাকায় মেয়ের বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার দিন সকালে তার স্ত্রী ছেলে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক মো. সনুর বাড়িতে গেলে সেখানে ছেলের বউয়ের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ছেলে সনু তার স্ত্রী সাম্মাকে (৫৫) পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ খবর কাজ থেকে ফিরে রাতে জানতে পারেন বৃদ্ধ ভলু। তিনি স্ত্রীর অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছেলের ওপর ইট ছুড়ে হামলা চালান। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সনু।
রাত সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে গেলে সনুর বাড়ির উঠানে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশে বেশ দূরে বসেছিলেন তার মা।
জানতে চাইলে সনুর মা সাম্মা বলেন, মাদকাসক্ত ছেলেকে তার বাবাই মেরেছে। তবে তিনি শাসন করতে চেয়েছিলেন, হত্যা করতে চাননি।
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ভলু হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। রাতেই সনুর স্ত্রী সাজদা শ্বশুরকে আসামি করে সৈয়দপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, সকালে আমার শাশুড়ি হুমকি দিয়েছিলেন, তোর স্বামীকে আজ হত্যা করা হবে। এটা যে সত্যি ঘটবে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। জানলে তিনি বাবার বাড়িতে যেতেন না বলে জানান। ঘটনার সময় সনুর স্ত্রী বাবার বাড়ি সৈয়দপুর শহরের সুরকিমিল মহল্লায় অবস্থান করছিলেন।
খবর পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানান, ঘটনাটি মর্মান্তিক, এটা সামাজিক অবক্ষয়। মাদকব্যধি এজন্য দায়ী। বিষয়টির নেপথ্যে কী আছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, সনুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। নিহত সনুর বাবা ভলুকে গ্রেফতার দেখান হয়েছে, তবে তিনি অসুস্থবোধ করলে স্থানীয় ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২০
এএটি