ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গুজবে প্রাণ হারানো জুয়েলের পরিবারকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের অনুদান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২০
গুজবে প্রাণ হারানো জুয়েলের পরিবারকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের অনুদান

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় শহিদুন্নবী জুয়েলকে। এমন নির্মম হত্যার শিকার জুয়েলের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন।

রোববার (৮ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়ার হাতে ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।

এ সময় নিহত জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়া সাংবাদিকদের বলেন, যারা আমাকে এতিম করেছে, পিতাহারা করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। শুধু অনুদান নয়, বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাইতেই এসেছি।  

নিহত জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বিশ্বাস, প্রশাসনের তৎপরতায় ন্যায় বিচার পাব। ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে দ্রুত বিচার কাজ শেষ করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।

নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজন ছড়িয়ে জুয়েল ও তার সঙ্গী একই এলাকার সুলতান রুবায়াত সুমনকে গণপিটুনি দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। পরে সন্ধ্যায় ইউপি ভবন ভেঙে প্রশাসনের উপস্থিতিতে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ছাই করেন তারা। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। এতে স্থানীয়দের ছোড়া পাথরের আঘাতে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্তসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ জুয়েলের সঙ্গী সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।  

এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ও ইউপি ভবন ভাঙচুরের দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এ ঘটনায় তিনটি মামলা ১১৪ জনের নামসহ শত শত অজ্ঞাত আসামির মধ্যে পুলিশ রোববার (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।

ঘটনার পর তদন্ত করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জেলা প্রসাসনের তদন্ত কমিটি কোরআন অবমাননার কোনো সত্যতা পায়নি। এটি মূলত একটি গুজব ছিল বলে তারা দাবি করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।