ঢাকা: বিদেশি জুতা আমদানি বন্ধ করে, দেশীয় পাদুকা শিল্প রক্ষায় আট দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিপ্লবী পাদুকা শিল্প শ্রমিক সংহতি।
সোমবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনা দুর্যোগে এই শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। লকডাউন এর কারণে ইতিমধ্যেই অসংখ্য কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে পুঁজি সংকট। অধিকাংশ মানুষকে এই সময়কালে তাদের স্বল্প পুঁজি ভেঙে খেতে হয়েছে। কয়েক লক্ষাধিক পাদুকা শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। তাদেরকে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। অনেক শ্রমিক পরিবারের বিপর্যয় নেমে এসেছে। অনিশ্চয়তা থাকায় অগ্রিম টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় গার্মেন্টসসহ অনেক শিল্প আর্থিক প্রণোদনা পেলেও পাদুকা শিল্প বা শ্রমিকদের জন্য কোন প্রণোদনা পাওয়া যায়নি। পাদুকা শিল্পের এখনো শ্রমিকদের বাঁচার মতো ন্যায্য মজুরি নেই। নিয়োগপত্র, পরিচয় পত্র নেই। নেই নিরাপদ ও উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ।
বক্তারা আরও বলেন, এই বছর কোরবানির চামড়া নিয়ে কী নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে আপনারা সবাই দেখেছেন। কার্যকরী পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও বরাদ্দের অভাবে অতি মূল্যবান চামড়া নষ্ট হয়েছে। চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। অথচ উপযুক্ত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ থাকলে চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে দেশ লাভবান হতে পারত। আর পাদুকা শিল্প সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ যুক্ত।
দাবিগুলো হলো: পাদুকা শিল্পকে জাতীয় শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পাদুকা শিল্পের জন্য আলাদা শিল্পনগরী স্থাপন করতে হবে। পাদুকা শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। চামড়াকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে গণ্য করে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য সংরক্ষণ চামড়াজাত বহুমুখী পণ্য উৎপাদন বিপণন ও উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি জুতা আমদানি বন্ধ করতে হবে। জুতা তৈরির কাঁচামাল ও পণ্যের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। জুতা রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
পাদুকা শিল্পের ছোট উদ্যোক্তারাও যাতে এই সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় পাদুকাশিল্প ও পাদুকা শ্রমিকদের বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। পাদুকা শিল্পের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। জাতীয় বাজেটে পাদুকা শিল্প শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিতে হবে। পাদুকা শ্রমিকদের সারা বছর কাজ ও বাঁচার মতো ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দিতে হবে। পাদুকা শিল্পের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই শিল্প বিকাশ ও শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্যও সরকারের একটি বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও পাদুকা শ্রমিকদের প্রকৃত প্রতিনিধি রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এমএমআই/জেআইএম