টাঙ্গাইল: মারধর ও মানহানির অভিযোগে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৯ নভেম্বর) হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোরশেদ আলম দুলাল ও বর্তমান ইউপি সদস্য মো. আইয়ুব আলী এবং মো. সাইফুল ইসলাম মণ্ডল বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করেন।
সাবেক চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম দুলালের মামলা সূত্রে জানা যায়, তিনি এলাকার জনগণের অনুরোধে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দুলাল তার সমর্থকদের মিথ্যা মামলা ও ভয় দেখানোর অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা গত ১০ সেপ্টেম্বর এক কর্মী সভায় মোর্শেদ আলম দুলালকে মাইকে উচ্চস্বরে গালিগালাজ ও তার পরিবারের সদস্যদের সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নানা রকম মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও চেয়ারম্যান যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন মোর্শেদ আলম দুলাল, তার সমর্থক ও আত্মীয়দের রাস্তায় বের হতে দেবে না, বের হলে হাত পা ভাঙাসহ খুন করার হুমকি দেন। এতে মোর্শেদ আলম দুলাল প্রায় ১০ কোটি টাকার মানহানি করেছেন।
ইউপি সদস্য মো. আইয়ুব আলীর মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা তার অনুসারীদের নিয়ে ১৯৯৯ সালে নির্বাচনে বিরোধকে কেন্দ্র করে চাপাতি, রামদাসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইয়ুব আলীর বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ ঘটনায় মামলা হলে তার অনুসারীরা জেলহাজতে থাকেন। পরবর্তীকালে মামলাটি আপস করেন। তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা গত ১০ সেপ্টেম্বর এক কর্মী সভায় মো. আইয়ুব আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও তার অপর পা কেটে ফেলার হুমকি দেন। এতে আইয়ুব আলী ৫০ লাখ টাকার মানহানি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন।
সাইফুল ইসলামের মামলা সূত্রে জানা যায়, ৪ নভেম্বর বুধবার সকালে সাইফুল ইসলাম ধানের বীজ ও কাপড় কিনতে বেগুনটাল বাজারে যান। কিছুক্ষণ পর হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা তার লোকজন নিয়ে এসে সাইফুল ইসলামকে ঘেরাও করেন। চেয়ারম্যান তাকে চড় থাপ্পর মারেন। এরপর চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে ধরে পার্শ্ববর্তী মার্কেটের তিন তলায় ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা চেয়ারম্যান, আশরাফের ছেলে নাইম, খাদেমের ছেলে রাকিবসহ ১২/১৩ জন লোক তাকে ক্লাবের কক্ষে আটকে রেখে কিল, ঘুষি, লাথিসহ রুলার, বাঁশের লাঠি ও ইলেকট্রিক তার দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাইফুল ইসলামের ডান পা ভেঙে দেন। অপর আসামি সুমন খান হত্যার উদ্দেশে সাইফুল ইসলামের গলাটিপে ধরেন। পরে মো. মাসুদ নামে এক আসামি সাইফুল ইসলামের পকেটে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। সাইফুলের ছেলে খবর দিলে গ্রাম পুলিশ ও সদর থানা পুলিশের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা বাংলানিউজকে জানান, ‘ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা আমাদের হয়রানি করছে। শুধু এখন নয় ১৯৭১ সাল থেকে তারা আমার পরিবারকে হয়রানি করছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
আরএ