ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাবনায় জমি দখল-ফসল নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার ইউপি চেয়ারম্যানের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
পাবনায় জমি দখল-ফসল নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার ইউপি চেয়ারম্যানের

পাবনা: প্রান্তিক চাষিদের কৃষি জমি দখল ও ফসল নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন মালিথা ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল বারী বাকী।  

সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলাউদ্দিন মালিথা ও আব্দুল বারী বাকী।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন হেমায়েতপুর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিম বিশ্বাস ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ মণ্ডল।

লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাদের নাম উল্লেখ করে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেটি সঠিক নয়। আমার ইউনিয়নের ভবানিপুর মৌজায় পদ্মা নদী সংলগ্ন চরের জায়গা নিয়ে এ জমির উভয় পক্ষের মালিকদের মধ্যে সম্প্রতি ঝামেলা হয়েছে। এক পক্ষ অপর পক্ষের ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ জমির ভবানীপুর মৌজায় রেকর্ড সূত্রে ডি এস ৬৩৪ খতিয়ানে ৬.১৮ একর সম্পত্তির মালিক হাফেজ প্রামাণিক। আর বর্তমানে ১৯৪৮ সালের জয়েনপুর মৌজায় ৬৩৪ ডি এস রেকর্ড পত্তন সূত্রে সম্পত্তি পান কথিত কৃষক পক্ষ নুর উদ্দিন গংরা। এ জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান দিতে পারিনি আমরা। বর্তমানে বিষটি নিয়ে উভয় পক্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। এ বিষয়টি পাবনা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারাধীন। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্র করে আমার ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত নেতার নাম জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ক্ষেতের ফসল কাটার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তবে আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে গণমাধ্যম কর্মীদের অনুরোধ জানান তিনি।

ঘটনায় বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল বারী বাকী বলেন, বিষয়টি নিছক ভুল বোঝাবুঝি। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের নাম ব্যবহার করে আমার রাজনৈতিক সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। পৈত্রিক সূত্রে হেমায়েতপুর এলাকায় আমাদের অনেক সম্পত্তি রয়েছে। তবে সব জমির হিসাব আমরা বলতেও পারব না। স্থানীয় কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে জমি চাষাবাদ করে খাচ্ছেন। কারা কী কারণে আমার নাম ব্যবহার করেছেন, তা বলতে পারছি না। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে আমি আপনাদের সামনে এসেছি। কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ কাজটি করিয়েছেন। কৃষকদের ক্ষতি করে কোনো দিন কোনো কাজ করিনি, কখনো করার ইচ্ছাও নেই আমার। রাজনীতি করার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ আমার কাছে আসতে পারেন, তবে কারো পক্ষ নিয়ে অন্যের ক্ষতি করার মতো মানুষ আমি না।  

প্রকৃত ঘটনা জেনে সঠিক সংবাদ তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

চলতি মাসের পহেলা নভেম্বর দিনের বেলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে চরভবানিপুর এলাকার প্রান্তিক কৃষকদের ১৮ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে দেন স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ওই দিনই পাবনা সদর থানায় নয়জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ফলন্ত গাছ হারিয়ে এখন দিশেহারা চাষিরা। তাই ফসল নষ্ট ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রান্তিক চাষিরা।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য আমি নিজে সেখানে গিয়েছিলাম। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্তের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত শেষে দ্রুত এ বিষযে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।