জয়পুরহাট: ভরণ-পোষণ না পেয়ে এবং শারীরিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অবশেষে সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কিরণ বালা নামে এক বৃদ্ধা।
ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের বড় তাজপুর দেওয়ান পাড়া গ্রামে।
সোমবার (০৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ছেলে সঞ্জিত কুমার বর্মনের বিরুদ্ধে মা কিরণ বালা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
জানা যায়, বড় তাজপুর দেওয়ান পাড়া গ্রামের কিরণ বালা তার স্বামী বাবলু বর্মনের মৃত্যুর পর এক ছেলে ও এক মেয়েকে অনেক কষ্টে বড় করেছেন। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর ছেলেকে নিয়ে ছিল তার সংসার। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে ছেলে সঞ্জিত কুমার বর্মন তার মাকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে বাড়ি ভিটার দলিল পত্র লিখে নেওয়ার জন্য অত্যাচার করে আসছেন। সর্বশেষ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে বর্তমানে কালাই উপজেলার বলিগ্রামে মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানালেও ছেলে তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন। ফলে বাধ্য হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি।
মেয়ে প্রতীমা রানী অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমার বড় ভাইয়ের অত্যাচারে মা তার বাড়িতে টিকতে পারেন না। ভরণ-পোষণ দেওয়া তো দূরের কথা, বাড়ির ভিটার দলিল তার নাম করে দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত মাকে অত্যাচার করে আসছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
নির্যাতনের শিকার বিধবা কিরণ বালা থানা চত্বরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর কত কষ্ট করে এক ছেলে ও এক মেয়েকে বড় করেছি। আজ সেই ছেলে চাচা-চাচির কথা মোতাবেক আমাকে পর করে দিয়েছে। ভাত কাপড় না দিক, দুঃখ নেই। কিন্তু দলিল পত্রের জন্য প্রতিনিয়ত আমাকে ছেলে নির্যাতন করে। যে কারণে উপায় না দেখে অবশেষে সন্তানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ায় পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ মোতাবেক ৫ ধারায় সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে মামলাটির তদন্ত সমাপ্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
এসআই