বরিশাল: বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়ায় অনুমোদনহীন একটি মাতৃ সদন ক্লিনিকে ডেলিভারি করাতে গিয়ে গর্ভের সন্তানসহ প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকালে নিহতের স্বামী মন্টু বাহাদুর আগৈলঝাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মাজারুল ইসলাম স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, উপজেলার দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক মন্টু বাহাদুরের স্ত্রী সীমা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে সোমবার (৯ নভেম্বর) সকালে তাকে পশ্চিম বাগধা রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন নামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। ওই ক্লিনিকে কোন রেজিস্ট্রার চিকিৎসক না থাকার পরেও সেখানে কর্মরত আয়া রাশিদা বেগম ও মায়া বেগম সন্তান সম্ভবা সীমা বেগমের ডেলিভারি করাতে গেলে গর্ভের সন্তানসহ সীমার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি সীমার স্বজনদের কাছে গোপন রেখে সীমাকে অন্যত্র নিয়ে ডেলিভারি করার কথা বলে ওই আয়ারা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মৃত সীমার স্বামী মন্টু ক্লিনিকের আয়াদের কথা মত পয়সারহাট আদর্শ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা সীমাকে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মামুন মোল্লা সীমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদার ও থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতাল থেকে মৃত সীমার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন জানান, উপজেলায় যতগুলো বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে তার তালিকায় ‘রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন’ ক্লিনিকের নাম নেই। সরকারি কোন অনুমোদন ছাড়া কীভাবে তারা রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা দেয় তা নিয়েও তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, ওই ক্লিনিকের কাগজপত্রসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য পুলিশসহ স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুকলাল সিকদারকে বলা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, এজাহারভূক্ত আসামি রাশিদা বেগম ও মায়া বেগম নামের দুই আয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
এমএস/জেআইএম