পদ্মা সেতু এলাকা (মুন্সিগঞ্জ) থেকে: পদ্মা সেতুর ৯ ও ১০ নম্বর 'টু-সি' পিলারের ওপর ৩৭তম স্প্যান বসানো হয়েছে। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর সাড়ে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি (৫ হাজার ৫৫০ মিটার)।
দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সফলভাবে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে স্প্যানটি বসানো হয়।
বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।
জানা গেছে, স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে। ৩৬তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় বসানো হলো এ স্প্যানটি। ৬ হাজার ১৫০ মিটারের সেতুতে স্প্যান বসবে মোট ৪১টি। এখন বাকি থাকলো ৪টি স্প্যান বসানো। এ ৪টি স্প্যান বসানো হলেই দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতুর বাকি ৭৫০ মিটার।
এদিকে, সকাল পৌনে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ায় অবস্থিত কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে স্প্যানটি নিয়ে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই সেতুর উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে কাঙ্ক্ষিত পিলারের কাছে পৌঁছায় ৩ হাজার ৬০০ টন সক্ষমতার ক্রেনটি। প্রায় ১ কিলোমিটার বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে নির্ধারিত পিলারের কাছে আসতে সময় লাগে আধা ঘণ্টা।
স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে পদ্মা সেতুর মূল সেতুর প্রকৌশলী জানান, প্রথমে স্প্যানটি নিয়ে ভাসমান ক্রেনটিকে নোঙর করা হয়। এরপর ২ পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে পজিশনিং করা হয়। স্প্যানটিকে ক্রেনের সহায়তায় তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। পরে রাখা হয় ২ পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর। আর এসব কাজ করতে হয়েছে সতর্কতার সঙ্গে। স্প্যান বসানোর আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ঠিকঠাক আছে কিনা নিশ্চিত করা হয়। এখন পাশের পিলারে স্থাপন করা স্প্যানের সঙ্গে ঝালাই করে দেওয়া হবে। যেটি করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। স্প্যান বসানোর সময় আশপাশ দিয়ে যাতে কোনো নৌযান চলাচল না করে সেদিকে দৃষ্টি রাখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
অন্যদিকে, পদ্মাসেতুতে বাকি ৪টি স্প্যানের মধ্যে ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বর পিলারে ৩৮তম স্প্যান (১-এ), ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর পিলারে ৩৯তম স্প্যান (২-ডি), ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারে ৪০তম স্প্যান (২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর। তবে আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে এ শিডিউল দু-একদিন আগে পরেও হতে পারে।
পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি পিলারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ ১৫০ মিটার (৬.১৫ কিলোমিটার)। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২০
এসআই