ঢাকা: রাজধানীতে ১০ বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ছয় থানায় এ পর্যন্ত নয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ ও বংশাল, ভাটারা ও বিমানবন্দর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে নয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। এ পর্যন্ত মতিঝিল থানায় দুই মামলায় (নম্বর-১৫ ও ১৬) একজন, শাহবাগ থানায় দুই মামলায় (নম্বর- ২১ ও ২২) ছয়জন, পল্টন থানায় দুই মামলায় (নম্বর- ৩৬ ও ৩৮) ১১ জন এবং বংশাল থানায় মামলায় (নম্বর -৪১) দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাসে আগুনের ঘটনায় ছয় থানায় নয়টি মামলায় মোট ৪০৩ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্ককর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকি বাংলানিউজকে বলেন, পল্টন থানায় দায়ের করা দু’টি মামলায় ৫৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ১১ জনকে।
বংশাল থানার ওসি মো. শাহীন ফকির বাংলানিউজকে বলেন, বাসে আগুনের ঘটনায় একটি মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৫৬ জনকে।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ বলেন, দুই মামলায় ৭৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে ছয়জনকে।
ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, বাসে আগুনের ঘটনায় ৯৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বিমানবন্দর থানার ওসি বি এম ফরমান আলী বলেন, বাসে আগুনের ঘটনায় ২৮ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলায় দায়ের করা হয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতার অভিযান চলছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগ, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, মতিঝিল, নয়াবাজার, ভাটারা, শাহজাহানপুর, বিমানবন্দরসহ নয়টি স্থানে ১০টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টন থানাধীন বিএনপি পার্টি অফিসের উত্তর পাশের কর অঞ্চলের ১৫ পার্ক করা সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর বেলা ১টার দিকে মতিঝিল থানাধীন মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে, ১টা ২৫ মিনিটে রমনা হোটেলের সামনে চলতি ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দেড়টার দিকে দেওয়ান পরিবহনে, ২টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহন এবং বংশাল থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় ২টা ২৫ মিনিটে দিশারী পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া ২টা ৪৫ মিনিটে পল্টন থানাধীন পার্কলিং-এ জৈনপুরী পরিবহন, বিকেল ৩টায় মতিঝিল থানাধীন পূবালী পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন দোতলা বিআরটিসি বাসে, ভাটারা থানাধীন কোকাকোলা মোড়ে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে এবং রাতে উত্তরার আজমপুরে আগুন দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারণা করছে, ঢাকা-১৮ আসনে সংসদীয় উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী কোনও পক্ষ নাশকতার উদ্দেশে একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দিয়েছে। নির্বাচনী এলাকার দু’টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ও ভোটগ্রহণের সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা এক কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২০
এসজেএ/এসআই