ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চেয়ারম্যানের ভয়ে রাতে দরজায় তালা দিয়ে ঘুমাতে হয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২০
চেয়ারম্যানের ভয়ে রাতে দরজায় তালা দিয়ে ঘুমাতে হয়

টাঙ্গাইল: আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার কথা মতো না চললে এলাকার জনসাধারণকে মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

তার কথার অবাধ্য হলে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে মারধর ও মানহানি করার কারণে চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খানের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।

সরেজমিন ওই ইউনিয়নে গেলে চর হুগড়া গ্রামের হিরু চাকলাদার কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, দুই ছেলে সিরাজগঞ্জে চাকরি করে। তিনি ও তার স্ত্রী সাহেরা বেগম বাড়িতেই থাকেন। কৃষিকাজ করে কোনো রকম সংসার চালান তিনি। তবে চেয়ারম্যান তোফার কারণে শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না। চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের ভয়ে রাতে ঘরের এক দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে অন্য দরজা দিয়ে ভেতরে গিয়ে ঘুমাতে হয় তাদের। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে হিরুর। মোটরসাইকেলের শব্দ শুনতে পেলেই দৌড়ে পালাতে হয় বাড়ি থেকে।  

তিনি বলেন, হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খানের সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম দুলালের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। কিন্তু তার প্রতিহিংসা হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেন। আমরা সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

শুধু হিরু চাকলাদার নয়, হিরু চালকদারের মতো হুগড়া ইউনিয়নের অনেকেই তোফার ভয়ে আতঙ্কে রাতদিন পার করছেন। গত ৪ নভেম্বর চর হুগড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী বেগুনটাল বাজারে ধানের বীজ ও কাপড় কিনতে গেলে তোফা ও তার লোকজন তাকে (সাইফুলকে) তুলে নিয়ে বেগুনটাল বাজারের একটি মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের টর্চার সেল নামে পরিচিত একটি ক্লাবে নিয়ে গিয়ে বেধরক মারধর করে সাইফুলের পা ভেঙে দেয়। কয়েকদিন চিকিৎসার পর তিনি গত ৯ নভেম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন।

চর হুগড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, তোফার কথা মতো না চলায় তার সঙ্গে আমার বিরোধ সৃষ্টি হয়। যে কারণে তিনি লোকজন নিয়ে আমাকে প্রায় চার ঘণ্টা ক্লাবে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে আমার ডান পা ভেঙে দেয়। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করলে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।

সাইফুলের মেয়ে মমতা বেগম বলেন, ‘আমার বাবার অবস্থা ভাল নয়। মাঝে মধ্যে সম্পূর্ণ শরীর ফুলে যায়। তোফা চেয়ারম্যান আমার বাবাকে বেধড়ক মারধর করেছে। আমরা তোফা চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে হুগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, তিনি কাউকে হুমকি বা ভয়ভীতি দেখাননি। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এ ধরনের সমালোচনা শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।