বরিশাল: বরিশালে মহাশ্মশানে চলছে দীপাবলি উৎসব। শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
প্রতিবছর ভারত, নেপাল থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনদের সমাধিতে প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের জন্য স্বজনরা এলেও এবার করোনা মহামারির কারণে তা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রায় ২০০ বছর ধরে চলা এ উৎসবে লাখো সমাধিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। অনেকে গিতা পাঠ ও কীর্তন করছেন এখানে।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী।
তিনি জানান, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করেই মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে সমাধিগুলোতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষদের। আর এবারে শিশুদের জন্য আলাদা স্থান রাখা হয়েছে শ্মশানে।
মানিক মুখার্জী জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টা ৩২ মিনিটে ভূত চতুর্দশী আরম্ভ হয়ে (১৪ নভেম্বর) শনিবার দুপুর ২টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত এ তিথি থাকবে। আর এ সময়ের মধ্যেই উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী দীপাবলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এখানে।
এরপর রাত ১২টা ১ মিনিটে শ্রী শ্রী শ্মশান কালীপূজা অনুষ্ঠিত হবে মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে। প্রতিবছরই এ বৃহৎ শ্মশানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এ উৎসব উদযাপন হয়ে থাকে।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর ভূত চতুর্দশী পুণ্য তিথিতে দীপাবলি উৎসব হয়ে থাকে। প্রিয়জনের সমাধিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়ার সেই প্রথা ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে হয়ে আসছে।
তিনি জানান, ঐতিহ্যবাহী এ মহাশ্মশানে ৬০ হাজারের মতো সমাধি স্থাপন করা রয়েছে। এতে শ্রদ্ধা জানাতে নেপাল ও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে ৫ একর ৯৬ শতাংশের এ শ্মশানে। তবে করোনার কারণে এবারের চিত্র একটু ভিন্ন। এখানে বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্বসহ সমাজসেবীদের সমাধি রয়েছে।
তমাল মালাকার জানান, দীপাবলি উৎসবকে ঘিরে আগে থেকেই স্বজনবিহীন প্রায় ৯০০ সমাধি মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে রং করা হয়। সমিতির বাইরে স্বজনরা নতুন করে সমাধি সংস্কার ও ধোয়া-মোছার কাজ করেছেন। এছাড়া মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে মহাশ্মশানে করা হয় বাহারি আলোকসজ্জা।
তিনি আরও জানান, মহামারি করোনার কারণে এবার শ্মশানে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে নো মাস্ক, নো এন্ট্রি অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া কাউকে শ্মশানের ভেতর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার প্রধান গেট দিয়ে সবাইকে জীবাণুনাশক স্প্রের মধ্য দিয়ে শ্মশানে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এক কথায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্মশান দীপাবলির আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২০
এমএস/আরবি/