ঢাকা: রাজধানীতে ১০ বাসে আগুন দেওয়া ও ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় নয় থানায় দায়ের করা ১৪টি মামলায় এ পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ২৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নয় থানায় দায়ের করা ১৪টি মামলায় আসামি দুই শতাধিক। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার ৩২ জন। এর মধ্যে ২৮ জন রিমান্ডে রযেছে। গ্রেফতারদের অধিকাংশরাই একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
ওয়ালিদ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলের সংগৃহীত ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মতিঝিল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার একজন দু’দিনের রিমান্ডে রয়েছে।
একই আইনে মতিঝিল থানায় অপর মামলায় গ্রেফতার আরেকজন দু’দিনের রিমান্ডে রয়েছে।
শাহবাগ থানার ২১ মামলায় গ্রেফতার তিনজন। পল্টন থানার বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় এজাহার নামীয় মোট ৩৮ আসামির মধ্যে গ্রেফতার সাতজন।
পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার একজন, পল্টন থানার এজাহার নামীয় মামলায় ৩৮ আসামির মধ্যে গ্রেফতার দু’জন।
বংশাল থানার মামলায় গ্রেফতার দু’জন, ভাটারা থানার বিস্ফোরক আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এজাহার নামীয় আসামি ৯৫ জন। তবে কোনো গ্রেফতার নেই।
কলাবাগান থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় এজাহার নামীয় ৪৯ আসামির মধ্যে গ্রেফতার দু'জন, তুরাগ থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় এজাহার নামীয় ৩৩ আসামির মধ্যে গ্রেফতার একজন।
বিমানবন্দর থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় এজাহার নামীয় ২৮ আসামি, গ্রেফতার নেই। উত্তরা পূর্ব থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় এজাহার নামীয় ২৮ আসামির মধ্যে গ্রেফতার নয়জন। একই থানায় পৃথক মামলায় এজাহার নামীয় আসামি ১৯ জন। তবে কোনো গ্রেফতার নেই।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, মতিঝিল, নয়াবাজার, ভাটারা, শাহজাহানপুর, বিমানবন্দরসহ নয়টি স্থানে ১০টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের তথ্য মতে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টন থানার বিএনপি পার্টি অফিসের উত্তর পাশের কর অঞ্চলের ১৫ পার্ক করা সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুর ১টার দিকে মতিঝিল থানার মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে, ১টা ২৫ মিনিটে রমনা হোটেলের সামনে চলতি ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দেড়টার দিকে দেওয়ান পরিবহনে, ২টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহন ও বংশাল থানার নয়াবাজার এলাকায় ২টা ২৫ মিনিটে দিশারী পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে পল্টন থানার পার্কলিং-এ জৈনপুরী পরিবহন, বিকেল ৩টায় মতিঝিল থানার পূবালী পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন দোতলা বিআরটিসি বাসে, ভাটারা থানার কোকাকোলা মোড়ে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে ও রাতে উত্তরার আজমপুরে আগুন দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারণা করছে, ঢাকা-১৮ আসনে সংসদীয় উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী কোনো পক্ষ নাশকতার উদ্দেশে একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দিয়েছে। নির্বাচনী এলাকার দু’টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ও ভোটগ্রহণের সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা এক কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
এসজেএ/আরবি/