ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্যসীমা ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে: মোমেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্যসীমা ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে: মোমেন মতবিনিময় সভা। ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১১ বছর ধরে আমাদের দেশ গড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

 

আগামী পাঁচ বছরে আরো পাঁচ শতাংশ দারিদ্রসীমা হ্রাস পাবে। অর্থনৈতিক কূটনীতির সফলতার কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। যেখানে অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের জন্য কোনো হাহাকার থাকবে না। জিডিপিতে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে তাতে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্যসীমা তিন শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।

শনিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাটোর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। এর আগে তিনি ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবন ও রাজবাড়ী পরিদর্শন করেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক কূটনীতি নিয়ে কাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে গিয়ে নতুন নতুন দেশে মানবসম্পদ রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যেও এসেছে বৈচিত্র্য। আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীসহ নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি করছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ তার জিডিপি ৮ দশমিক ২ এ রাখতে সক্ষম হয়েছে। যা অনেক দেশের কাছেই বিস্ময়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত-সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব-এই পররাষ্ট্র নীতিতে পথ চলছে বাংলাদেশ। সবার সঙ্গে বৈরীতা পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আমাদের লক্ষ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল অর্জন করা। করোনাকালীন স্থবির সময়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ থেকে করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসার মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ লাখ পিপি পাঠানো হয়েছে।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঁচটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে- দেশের মানব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনগোষ্ঠির জন্যে বিশ্বের নতুন নতুন দেশে কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, দেশের অপার সম্ভাবনাময় মানব সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের সহজলভ্যতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা, দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানকে সম্মান দিতে বিদেশে আমাদের মিশনগুলোতে পাসপোর্ট ডেলিভারিসহ প্রযুক্তি নির্ভর সেবার পরিধি দ্রুত ও সহজ করা হচ্ছে। মুজিববর্ষ-২০২০ এবং স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি-২০২১ কে কেন্দ্র করে বিশ্বের কাছে অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে তুলে ধরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বললেন, বিশ্বের সর্বাধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচনেও আমরা অগ্রগামী। ইতোমধ্যে গত ১১ বছরে দেশের দারিদ্রসীমা অর্ধেক হ্রাস পেয়ে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী পাঁচ বছরে আরো পাঁচ শতাংশ হ্রাস পাবে। পর্যায়ক্রমে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ উন্নয়নের পথ পরিক্রমায় ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর চির কাঙ্ক্ষিত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।   

ভারত পাকিস্তান উত্তেজনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবসময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার নীতি অনুসরণ করে। যুদ্ধ নয়, সীমান্ত হত্যা, পানি সমস্যাসহ অনেক অমীমাংসিত বিষয় বাংলাদেশ ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করেছে। নরেন্দ্র মোদী-শেখ হাসিনা যেভাবে সমস্যার সমাধান করেছে অন্য কোথাও তার নজির পাওয়া যাবে না।  

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ও নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা প্রমুখ।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল হক, মো. সাব্বির আহমদ চৌধুরী ও সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, খন্দকার মো. তালহা, মো. নজরুল ইসলাম, মো. তারিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও মেহেদী হাসান প্রমুখ।  

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ। সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।