ঢাকা: ‘জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম হত্যা মামলায় মাইন্ড এইড হাসপাতালের চার পরিচালকসহ ১২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
‘গ্রেফতাকৃত ১২ জন হলেন-নিয়াজ মোর্শেদ (পরিচালক), ফতেমা তুজ যোহরা ময়না (পরিচালক), আরিফ মাহমুদ জয় (ম্যানেজার ও পরিচালক) ও রেদোয়ান সাব্বির (কোঅর্ডিনেটর ও পরিচালক) মাসুদ (কিচেন সেফ), তানভির হাসান (ফার্মাসিস্ট), জোবায়ের হোসেন (ওয়ার্ড বয), তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মোহাম্মদ লিটন হাসান ও সাইফুল ইসলাম পলাশ। ’
শনিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শহীদুজ্জামান বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।
এ ঘটনায় সরাসরি সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১১ নভেম্বর) নিয়াজ মোর্শেদকে নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ফতেমা তুজ যোহরা ময়নাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি বলেন, এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় মাইন্ড এইড হাসপাতালের ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতালের সাত পরিচালকের মধ্যে এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তিন পরিচালকের মধ্যে একজন সুইডেনে আছেন। তাদেরও খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
ওসি আরও বলেন, গ্রেফতার ১২ জনের মধ্যে ১০ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের দুই পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ ও ফতেমা তুজ যোহরা ময়না অসুস্থ থাকায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চিকিৎসা শেষে তাদেরকে আবার আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুলকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হেঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
এমএমআই/এএটি