মেহেরপুর: সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো ধরনের বিচার না পেয়ে অবশেষে সাতদিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে মেহেরপুরের সাংবাদিক সমাজ।
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে জেলা প্রেসক্লাবের জরুরি সভা শেষে এ ঘোষণা দেন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আন্দোলন প্রস্তুতির আহ্বায়ক রুহুল কুদ্দুস টিটো।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক মন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা তুহিন আরণ্য, কামারুজ্জামান খান, সিনিয়র সাংবাদিক রুহুল কুদ্দুস টিটোসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা।
ওই কর্মসূচির মধ্যে থাকছে সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও পথসভা, ১৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় মৌণমিছিল। মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হবে। ১৮ অক্টোবর (বুধবার) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন। ১৯ অক্টোবর সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন, ২০ অক্টোবর সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন, ২১ অক্টোবর সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
সবশেষে ২২ অক্টোবর থেকে জেলা প্রমাণসহ সব অফিসের সংবাদ বয়কট করা হবে।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসির মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি আবু আক্তার করন ও বাংলাদেশ রয়টার্সের মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি জাকির হোসেনের ওপর মেহেরপুর সমাজসেবা ডিডি আব্দুল কাদের ও তার অফিস স্টাফদের হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর ও অফিস কক্ষে আটকিয়ে রাখার প্রতিবাদে বিচার দাবি করে ওই কর্মসূচি ঘোষণা দেন সাংবাদিক নেতারা।
মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, হিজড়াদের প্রশিক্ষণের ভাতা আত্মসাৎ, সরকারি বাড়ি ভাড়া না থেকেও নিজ অফিসের পাশের একটি কক্ষকে গোপনে বেডরুম হিসেবে ব্যবহার করার পরেও এক লাখ টাকা উত্তোলন, করোনার সময়ে ভ্রমণ না করেও ৪৮ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেন। এ বিষয়ে নিউজ করতে গত রোববার সকালে জেলা সমাজসেবা অফিসে যান ওই দুই সাংবাদিক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপ-পরিচালক মো. আব্দুল কাদের তাদের অফিসে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করেন এবং তাদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে অন্য সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খাঁন মেহেরপুরের সাংবাদিকদের সঙ্গে তার সম্মেলন কক্ষে জরুরি আলোচনা সভা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। এর সাতদিন পার হলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে না পেয়ে রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে পদক্ষেপ সমন্ধে জানতে চান। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান পদক্ষেপ সমন্ধে সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় প্রেসক্লাব নেতারা বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
এএটি