ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘৫ বছরের মধ্যে আর্থিক হিসাব প্রক্রিয়ায় আসবে সব নাগরিক’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
‘৫ বছরের মধ্যে আর্থিক হিসাব প্রক্রিয়ায় আসবে সব নাগরিক’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম

ঢাকা: ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ মানুষকে আর্থিক হিসাব প্রক্রিয়ায় আনার জন্য ‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল’ এর বাংলা ও ইংরাজি সংস্করণের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১৬ নভেম্বর) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “সর্বাধিক সংখ্যক জনগণকে আর্থিক হিসাব প্রক্রিয়ার মধ্যে আনার বিষয়টি জাতিসংঘের চাহিদা। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দারিদ্র বিমোচন, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার আওতায় এনে তাদের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এ কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। ”

তিনি বলেন, “মূল বিষয় হচ্ছে, ডিজিটাইজেশন এবং ইনোভেশনের মাধ্যমে একটি টেকসই আর্থিক অন্তর্ভুক্তি। ’ 

সচিব জানান, ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য এ কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০৪১ সালের যে পরিকল্পনা আছে, তার সঙ্গে সপ্তম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং এসডিজির যোগসূত্র আছে। কৌশলপত্রে সাতটি উদ্দেশ্য ও ১২টি কৌশলগত অভিষ্ট আছে। এছাড়া আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ৬৫টি লক্ষ্যমাত্রা সমন্বয় করা হয়েছে।  

২০২১-২০২৫ মেয়াদে জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাঁচ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা অর্থায়ন প্রাক্কলন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “করোনার কারণে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য, পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যন্ত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন খাতের উত্তরণে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা ও সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠাগুলোর মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। ” 

জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কৌশলের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সিগুলো ব্যাংক, অব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী এজেন্সিগুলোকে গ্রাহকবান্ধব করে সেবা নিশ্চিত করা হবে।  

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটা পূরণ করতে গিয়ে মন্ত্রিসভা কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যে কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে ২০১৭-১৮ এর ডাটা ধরা হয়েছিল। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে ২০২০-এর ডাটা ব্যবহার করার জন্য। কারণ ২০২০ এ সরকার যে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করলো সেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ হিসাব প্রক্রিয়ার মধ্যে চলে এসেছে। ৪০ লাখের মতো নতুন অ্যাকাউন্ট হয়ে গেছে। আড়াই হাজার টাকা করে যে অনুদান দেওয়া হল। যাকেই যে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের যে গোলডেন হান্ডশেক দেওয়া হয়েছে সেটা ৫০ শতাংশ একবারে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে দেওয়া হয়েছে, যাতে একবারে খরচ করতে না পারে।  

তিনি বলেন, “আমাদের এখন যে স্ট্যাটাস তাতে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত ফিনান্সিয়াল কাভারেজ দিতে পারছি। ২০২০ সালের প্রোগ্রামগুলো যদি আমরা গণনা করি তাহলে ৭২-৭৩ শতাংশে চলে যাব। ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ এ অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের মধ্যে আনার চিন্তা-ভাবনা আছে। ” 

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন ‘আমার বাড়ি আমার খামারের’ জন্য আলাদা জাতীয় সঞ্চয় স্কিম এখানে অন্তর্ভুক্ত করে দেওয়া, যাতে গ্রামাঞ্চলে এ প্রজেক্টের মাধ্যমে আয় করছে সেটাকেও যেন অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের মধ্যে আনা যায় এবং তাদের যেন সঞ্চয়ের একটা সিস্টেম করে দেওয়া যায়।  

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভারতে ৭৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৭৩ শতাংশ অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম আছে। আমরা অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমে ৫৩ শতাংশ হলেও গত ৭-৮ মাসে যে পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো কাউন্ট করলে আমাদের অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম আরও বেশি হবে।  

‘আপনি যখন অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের মধ্যে আসবেন তখন আপনার সবকিছু পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে। যে টার্গেট ছিল সেই আকারে কত টাকা কোথায় ব্যয় করছেন, কি রিটার্ন আসছে, সে সবের। ডিজিটালাইজেশন ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে আর্থিক টেকসই ও ফলপ্রসূ সিস্টেম দাঁড় করানো যাতে মানুষের জীবন ও জীবিকার মান্নোনয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।