গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় রায়হান আলী (৩৯) নামে কিডনি পাচার চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার (১৫ নভেম্বর) গাইবান্ধার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রায়হান।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে শহরের পলাশপাড়ার পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এআরএম আলিফ এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের একটি অপহরণ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তারা কিডনি পাচার চক্রের সন্ধান পান। চক্রটি চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সোহালী গ্রামের আব্দুল মজিদ সরকারের ছেলে আব্দুল ওহাবকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় একই উপজেলার পশ্চিম বানিহালি গ্রামের নুর আলমের ছেলে রাকিবুল হাসানের মাধ্যমে। এরপর ওহাবের আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ওহাবের বাবা মজিদ সরকার বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেন। একই বছরের ২২ নভেম্বর রাকিবুল ঢাকার গাজীপুরে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে ওহাবকে কিডনি পাচার চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার তথ্য দেয়।
পরবর্তীকালে ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই মামলাটি পিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পর কিডনি পাচার চক্রের সদস্য রায়হানের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ১৩ নভেম্বর
ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রায়হান উল্লেখ করেন, আসামি রাকিবুল ভুক্তভোগী ওহাবকে তার কাছে পাঠিয়ে দেন। এরপর তিনি ওহাবকে সান এন্টারপ্রাইজের মালিক কবিরের কাছে পাঠালে কবির ভারতীয় দূতাবাস থেকে ভিসা সংগ্রহ করে কুমিল্লা জেলার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে ওহাবকে ভারতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে একটি হাসপাতালে অপারেশন করে ওহাবের শরীর থেকে একটি কিডনি বের করে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী ওহাবের সঙ্গে সান এন্টারপ্রাইজের মালিক কবির একটি কিডনি বাবদ ৫ লাখ টাকা চুক্তি করলেও প্রতারক চক্রটি ওহাবকে মাত্র ৫০ হাজার দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
এ চক্রের বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার এআরএম আলিফ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
আরএ