ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেমের ফাঁদে ফেলে সবই করতেন তিনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
প্রেমের ফাঁদে ফেলে সবই করতেন তিনি গ্রেফতার মোহাম্মদ ইয়াসিন রাতুল

ঢাকা: অভিনব কৌশলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসংখ্য মেয়েদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে ভিকটিমের মোবাইলেই গোপনে ভিডিও করতেন মোহাম্মদ ইয়াসিন রাতুল। কৌশলে ভিকটিমের মোবাইল নিয়ে সটকে পড়তেন।

এরপর ভিকটিমের মোবাইলের ভিডিও ও ফেসবুক আইডি দখলে নিয়ে চালাতেন ব্ল্যাকমেলিং।  

এমন একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে রাতুলকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণা-ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল ও ১০টি সিম কার্ড উদ্ধার হয়। যার মধ্যে ব্ল্যাকমেলিংয়ে ব্যবহৃত চারটি ফেইক ফেসবুক আইডি ও নয়টি জি-মেইল অ্যাকাউন্ট পাওয়া যায়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ জানান, অভিনব কৌশলে মোবাইল ফোন চুরি করে ফেসবুক আইডি দখলে নিয়ে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইলিং করে আসা রাতুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন তিনি। কৌশলে ভিকটিমের মোবাইলেই যৌন দৃশ্য ধারণ করে মোবাইল নিয়ে গোপনে সটকে পড়তেন। মোবাইল বিক্রির আগে ভিকটিমের ভিডিও কন্টেন্ট ও ফেসবুক আইডির দখল নিয়ে রাখতেন রাতুল। আর সেসব দিয়ে দিনের পর দিন ওইসব তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করতেন।

গ্রেফতার রাতুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাতুলের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে ঢাকার মিরপুরে চলে আসেন। প্রথমে স্থানীয় এক নেতার বাসায় চা বয় হিসেবে কাজ নেন। পরবর্তিতে মোহাম্মদপুর রিংরোডে এক শো-রুমে সেলসম্যানের চাকরি নেন। হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে সাইবার অপরাধের পথে পা বাড়ান, জড়িয়ে পড়েন যৌন ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাজে।

রাতুলের প্রতারণার শিকার এমন একজন ভিকটিম সিআইডি সাইবার ক্রাইমের কাছে অভিযোগে জানান, ছয় মাস ধরে তার সঙ্গে রাতুলের পরিচয়। একদিন ভিকটিমকে চাঁদপুর যাওয়ার প্রস্তাব দেন রাতুল। কথা অনুযায়ী লঞ্চে থাকাকালীন মোবাইলে কৌশলে ভিকটিমের নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন। লঞ্চ থেকে ঢাকায় নামার পর রাতুলের মোবাইলে ব্যালেন্স না থাকার কথা বলে ভিকটিমের মোবাইল নিয়ে সটকে পড়েন।

এরপর সে ভিকটিমের মোবাইলে থাকা বিকাশের ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেন এবং পরের দিন ন্যুড ভিডিও পাঠিয়ে আরও ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন।

এমন বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সাইবার ক্রাইম রাতুলকে গ্রেফতার করে এবং তার ব্যবহৃত সব মোবাইল উদ্ধার করে। সেসব মোবাইলে অন্তত ১০ জন ভিকটিমের তথ্য পাওয়া গেছে।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, রাতুলকে সোমবার শাহজাহানপুর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।