ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চিরনিদ্রায় শায়িত সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
চিরনিদ্রায় শায়িত সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নিজ বাড়ি ‘স্বাধীনতা ভবন’ এর আঙ্গিনায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি, নবম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) শওকত আলী।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) জোহরের নমাজের পর উপজেলার নড়িয়া বি এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন শওকত আলী। তিনি কিডনি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২৯ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

কর্নেল (অব.) শওকত আলীর মরদেহ বহনকারী সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টার সকাল ১০টায় শরীয়তপুর স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন ও গার্ড অব অনার শেষে সকাল ১১টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নড়িয়া উপজেলা শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন কর্নেল (অব.) শওকত আলী। বাদ জোহর নড়িয়া বি এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ইকবাল হোসেন অপু, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মুসল্লিরা। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিজ বাড়ি স্বাধীনতা ভবনের আঙ্গিনায় চিরনিদ্রায় শায়িত হন শওকত আলী।

শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার লোনসিং বাহের দিঘীরপাড় গ্রামে ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন শওকত আলী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান। পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হয়েছিল এতে শওকত আলীকে ২৬ নম্বর আসামি করা হয়। ১৯৬৮ সালের ১০ জানুয়ারি ক্যাপ্টেন পদে থাকা অবস্থায় পশ্চিম পাকিস্তানে ক্যান্টনমেন্ট থেকে আটক করার পর ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন শওকত আলী। স্বাধীনতার পর আবার সেনাবাহিনীতে ফেরেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর শওকত আলীকে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়। সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়া হন। ১৯৭৯ সালে শরীয়তপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচত হন। সেবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের হুইপের দায়িত্ব পান তিনি।

শরীয়তপুরের ওই আসনে থেকে এরপর আরও পাঁচবার এমপি হয়েছিলেন শওকত আলী। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নবম জাতীয় সংসদে যখন স্পিকার ছিলেন তখন শওকত আলী ছিলেন ডেপুটি স্পিকার। দশম সংসদে তাকে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শওকত আলী ৭১ ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক কন্যার জনক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।