ঢাকা: চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পাঁচজনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহিম।
কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান ছাড়াও এ মামলায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খায়রুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং সোর্স দেলোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬৬/১৬৭/১৭০/৩৮৫/৩৮৯/৩৪ ধারায় চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি অভিযোগে আনা হয়েছে।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আগামী ৩ ডিসেম্বর মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন বলে জানান ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহরিয়ার।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, বাদী আব্দুর রহিম গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাজ শেষে চরকালিগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজের ওপর এলে অজ্ঞাতনামা তিনজন লোক তার গতিরোধ করেন। তারা নিজেদের ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। রহিমের নামে ডিবিতে মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে জানায়।
পরে রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করে। তবে তার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তারপরও তারা রহিমকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে যায়। ওই অজ্ঞাতনামা তিনজন রহিমকে সিএনজিতে করে বাবুবাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার উপস্থিত ছিলেন। এ তিন আসামি তাদের কাছ থেকে ৬৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে বলে এগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
এসময় এসআই আনিসুল ইসলাম বলেন যদি ফাঁসতে না চাস, তাহলে দুই লাখ টাকা জোগার কর, না হলে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেবো। এ থেকে বাঁচার জন্য রহিম তার কাছে থাকা এক ভরি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৩ হাজার টাকা তুলে দেন। দাবি করা দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম তাদের ৫০ হাজার টাকা দেয়। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রহিমকে ডেকে নেন ওসি মিজানুর রহমান। তাকে বলেন, তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, দাবি করা দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় ১০ পিস ইয়াবার উদ্ধারের মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ১৭ দিন জেলে থেকে ৩০ অক্টোবর মুক্তি পান রহিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
কেআই/ওএইচ/