রাজশাহী: রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে রাজশাহী রেশম কারখানায় আরও কিছু লুম চালুর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী রেশম কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা জাননা।
এ সময় তিনি রেশম থেকে কাপড় উৎপাদন দেখেন এবং আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর উপযোগী করতে নির্দেশনা দেন। উৎপাদন বাড়াতে আরও লুম চালুর উদ্যোগের কথাও জানান তিনি। বর্তমানে কারখানাটিতে ১৯টি লুম চালু রয়েছে।
কারখানা পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ছয়টি লুম চালু করেছিলাম। পরে সেটি ১৯টিতে গিয়ে দাঁড়ায়। আমরা এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালু করতে চাই। সে জন্যই কারখানার লুমগুলো দেখে এলাম।
তিনি জানান, বর্তমানে কারখানায় যে কাপড় উৎপাদন হচ্ছে তা ছোট একটি শো-রুমে রাখা হচ্ছে। আরও বেশি লুম চালু করে আমরা শো-রুমটিও বড় করতে চাই। এর পাশাপাশি অনলাইনে রেশম পণ্য বিক্রির একটা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রেশম বোর্ডের আগামী বোর্ডসভায় সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। রেশমের হারানো ঐতিহ্য আমরা আবারও ফিরিয়ে আনতে চাই।
রেশম কারখানা পরিদর্শনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও গবেষকেরা।
এর আগে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার লোকসানের কারণ দেখিয়ে রেশম কারখানাটি বন্ধ করে। তখন এই কারখানার ঋণের বোঝা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপর সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হয়েই কারখানাটি চালুর জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেন। তার প্রচেষ্টায় ১৬ বছর পর ২০১৮ সালে কারখানাটিতে প্রথম ছয়টি লুম চালু করা হয়। বর্তমানে ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বোর্ডের পক্ষ থেকে।
রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই রেশম কারখানা। কারখানাটি বন্ধের সময় মোট ৬৩টি লুম ছিল। এরমধ্যে উৎপাদন চলতো পুরনো ৩৫টি লুমে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে এক লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করতো। কারখানায় ৬৩টি লুম চালু করা গেলে বছরে কাপড় উৎপাদন হবে দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
এসএস/এইচএমএস