ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাড়ির নাম যখন ‘কুত্তা গাড়ি’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
গাড়ির নাম যখন ‘কুত্তা গাড়ি’

মাটি, চাল, ডাল কিংবা আসবাব পত্র, যে কোনো পণ্য পরিবহনেই জুড়ি নেই ছোটখাট গাড়ি লাটারহাম্বারের। চার বা ছয় চাকার গাড়িটি দেখতে অনেকটা ট্রাকের মতো।

তবে আকার ট্রাকের চেয়ে অনেক ছোট। শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নছিমন, করিমন, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, অন্য যে কোনো থ্রি-হুইলার বা হিউম্যান হলারের চেয়ে এই গাড়িটির দুর্ঘটনার হার মোটেই বেশি নয়। টুকটাক দুর্ঘটনা বাদ দিলে পণ্য পরিবহনে মানুষের উপকারেই লাগে গাড়িটি। তারপরও অজানা কারণে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এই গাড়িকে ডাকা হয় কুত্তা গাড়ি বলে। বিস্ময়কর হলেও এটিই সত্য। এখানে গাড়িটিকে মানুষ এই নামেই চেনেন।

কেন কীভাবে এই নামকরণ হলো, সেটা স্পষ্ট না হলেও স্থানীয়দের সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেছে। তবে সকলেই এক জায়গায় স্থির তা হলো এই গাড়ির সামর্থ। যে কোনো গাড়ি যে কোনো জায়গায় যেতে পারে না, এই 'কুত্তা গাড়ি' সবখানেই যেতে পারে। এটার আসল নাম লাটাহাম্বার- এমনটাই জানা গেছে স্থানীয় সূত্রে।

গাড়ির শক্তি বেশি এই জন্যই নাকি গাড়ির নাম কুত্তা গাড়ি। আবার কেউ বলছেন এই গাড়ি পানির মধ্যেও নেমে চলতে পারে। অর্থাৎ অর্ধেক ডুবে গেলে ও নাকি চলতে পারে, এমন বৈশিষ্ট্যের জন্যও নাকি গাড়িটিকে কুত্তা গাড়ি বলা হয়। তবে এই গাড়িকে আসলেই উঁচু নিচু খালবিল এলাকায় পৌঁছে যেতে দেখা গেল। ইট মাটি ও মালামাল বহনে সক্ষম কুত্তা গাড়ি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় মাটি ভরাটের কাজে।

এই গাড়িতে ৯ থেকে ১০ টন মালামাল নাকি খুব সুন্দরভাবেই ধরে যাবে। তবে সাইজে ছোটও কিছু গাড়ি দেখা যায়।

কবে এই গাড়ি তৈরি হয়েছে এই বিষয়ে জানা যায় খুব বেশিদিন আগে এই গাড়ির প্রচলন ঘটেনি। সাত থেকে আট বছর আগে এই গাড়ির প্রচলন শুরু হয় উল্লাপাড়ায়। উল্লাপাড়ার বাইরে এই গাড়ি তেমনটা দেখা যায় না। তবে নছিমন করিমনের পাশপাশি কুত্তা গাড়ি প্রচুর রয়েছে উল্লাপাড়ায়। এটি কে বানিয়েছেন, তা জানা যায়নি। এই গাড়ি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমেও তেমন কোনো খবর নেই।  

তবে শাইখ সিরাজ এই গাড়ির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠান প্রচার করেছেন। ঢাকার ফটোগ্রাফার ফিরোজ চৌধুরী এই গাড়ি নিয়ে একটি বিশ্লেষণমূলক ভিডিও বানিয়েছেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ার মানুষদের বেশ আকৃষ্ট করেছে। গাড়িটি বানাতে খরচ হয় সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মতো।  

একজন স্থানীয় ব্যক্তির ভাষ্য, কুত্তা (কুকুর) যেমন সব জায়গায় যায়, এই গাড়িও সব জায়গায় যায়, মূলত এই গাড়িকে এই কারণেই কুত্তা গাড়ি হিসেবে অভিহিত করা হয়। অভিহিত বললে ভুল হবে। এই গাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে কুত্তা গাড়ি, অন্য নামে কেউ চিনবে না।

কুত্তা গাড়ির ইঞ্জিন একেবারে সামনে উন্মুক্ত। স্থানীয়ভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে এর ইঞ্জিন তৈরি করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।