ঢাকা: আমার নিষ্পাপ ছেলে শামীম মিয়াকে (১৩) নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে তো এলাকার কারো কোনো শত্রুতা ছিলো না।
রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ শশী কমল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে আমার ছেলে পড়াতো। পাড়াশোনা আর সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করতো। আমার ছেলে খুবই মেধাবি ছিলো। তাকে আমরা বিসিএস ক্যাডার বনানোর স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু দুর্বৃত্তরা ব্যাটারি চালিত ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তারা আমার কোল শূন্য করে দিয়েছে। আমি ছেলের শোকে দিশেহারা।
আমার স্বামী ট্রাক চালক। আমরা গরিব। ছেলে হত্যা মামলা চালানোর মতো সঙ্গতি আমদের নেই। তারপরও আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ২টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান করে স্কুলছাত্র শামীম মিয়ার মা জেসমিন বেগম এ দাবি জানান।
তিনি তার স্বামী মো. অরিফ মিয়া ও ভাসুর মো. মোক্তার মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ছেলে হত্যার বিচারের দাবি সম্বলিত পোস্টার হাতে নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার স্কুলছাত্র শামীম মিয়া কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামের মো. আরিফ মিয়ার ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার স্কুলছাত্র শামীম মিয়ার পিতা আরিফ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, করোনার মধ্যে শামীমের স্কুল বন্ধ রয়েছে। তাই ১ মাস আগে সে পাশ্ববর্তী ওড়াকান্দি গ্রামের সুমন তালুকদারের কাছ থেকে একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়ি প্রতিদিন ১৫০ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রী পরিবহন করে রোজগার শুরু করে। শামীম গত ২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরের দিন তিনি এ ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। গত ৫ নভেম্বর কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের বসরত খালের কচুরিপানার মধ্য থেকে পুলিশ শামীমের মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে গত ৫ নভেম্বর শামীমের মরদেহ দাফন করা হয়। ওই দিন রাতেই কাশিয়ানী থানায় তিনি অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
এনটি