বাগেরহাট: বাগেহাটের মোরেলগঞ্জে ঘুমন্ত মা-বাবার পাশ থেকে নবজাতক সোহানা চুরি ও হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার শিশুটির বাবা সুজন খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ সুজনকে আদালতে সোপর্দ করলে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর বিচারক সমির মল্লিক এ আদেশ দেন।
এর আগে, সুজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়। এছাড়াও হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে সুজনের ছোট ভাই রিপন খান (২৫) ও ভগ্নিপতি হাসিব শেখকে (৩০) এর ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, বুধবার বিকেলে শিশু সোহানা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবা সুজন খান, চাচা রিপন খান ও ফুফা হাসিব শেখকে হেফাজতে নেয় মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারেনি শিশুটির মা শান্তা আক্তার। সন্তান হত্যার সঙ্গে যদি নিজের স্বামীও জড়িত থাকে তাহলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছেন সন্তান হারা মা শান্তা আক্তার।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত শেষে আমরা জড়িত সন্দেহে শিশুটির পিতা সুজন খানকে গ্রেফতার করেছি। তাকে আদালতে সোপর্দের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও সুজনের ছোট ভাই রিপন খান (২৫) ও ভগ্নিপতি হাসিব শেখকে (৩০) এর ডিএনএ টেস্ট করা হবে। হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে পরপর দুটি কন্যা সন্তান হওয়ায় এই মেয়েকে হত্যা করেছে সুজন এমনটি বলেছেন এলাকার অনেকেই। নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, হত্যার শিকার সোহানা জন্মের তিনদিন পরেই সাগরে মাছ ধরতে যান সুজন। ১২ দিন পরে ফিরে এসে নিজ ঘরে না ঘুমিয়ে বাড়ির সামনের ট্রলারে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। সুজনের আগের স্ত্রীর দুই বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। পরপর দুটি মেয়ে হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এই সন্তানকে হত্যা করেছে বলে মনে করছেন তারা।
অন্যদিকে স্ত্রীর পরোকিয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে নিজ সন্তানকে হত্যা করেছে সুজন এমনটি দাবি করেছেন স্থানীয় অনেকে।
রোববার (১৫ নভেম্বর) রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামে বাবা সুজন খান ও মা শান্তা আক্তারের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল ১৭ দিন বয়সী সোহানা। মধ্য রাতে ঘুম ভেঙে তারা দেখেন যে শিশুটি হারিয়ে গেছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) ভোর থেকে পুলিশের একাধিক দল শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করলেও কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিল না পুলিশ।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা করেন শিশুটির দাদা আলী হোসেন খান। বুধবার ভোরে নামাজের পর নিজ ঘরের সামনের পুকুরে নাতির মরদেহ ভাসতে দেখেন আলী হোসেন। পরে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
এনটি