ঢাকা: মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান বাদ দিয়ে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল-২০২০ বিল পাস করেছে জাতীয় সংসদ।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এ বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।
গত ৮ নভেম্বর বিলটি সংসদে তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে, সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করবে এবং প্রত্যেক ট্রাইব্যুনালে অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বিচারক নিয়োগ করা হবে। কোনো জেলায় অতিরিক্ত জেলা জজ না থাকলে ওই জেলায় দায়রা জজ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালন করবেন। আর ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তি করবেন।
তবে প্রশাসনিক কারণে অদ্যাবধি মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন বা জেলা বা দায়রা জজকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অসংখ্য মাদক অপরাধ সংক্রান্ত মামলা হলেও তা বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে, মামলার সংখ্যাও বাড়ছে।
নেশার বড়ি ইয়াবার উৎপাদন, পরিবহন, বিপণনের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় সংসদে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮’ পাস হয়। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়।
২০১৮ সালের আইনে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মাদকদ্রব্যের সব অপরাধ বিচার করার কথা বলা ছিল।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র টাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলা করতে গেলে দীর্ঘ সময় লাগে। নিষ্পত্তি এবং আপিলের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়, সেজন্য আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে।
বিলে বলা হয়েছে, এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতকে মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। কেউ আপিল করতে চাইলে রায় দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তা করতে হবে।
বিলটি নিয়ে এ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা তুলে খসড়া আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত আইন এর অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ‘এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত’ কর্তৃক বিচার্য হবে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট উহার এখতিয়ারাধীন এলাকার জন্য কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচারের নিমিত্ত প্রয়োজনে এক বা একাধিক এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত নির্দিষ্ট করবেন। ফলে মাদক অপরাধের মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
এসকে/এইচএডি