ঢাকা: স্কুল খুলে বাচ্চাদের মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারি না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে স্কুল খোলার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ও সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।
আমাদের দেশেও স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েব শুরু হওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্কুল খুলে বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারি না বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানান ৷
এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে বিরোধী দলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার যৌক্তিতা নেই মন্তব্য করে তা খুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
জিএম কাদের তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, সবকিছু চলে শুধু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে ৷ এতে শিক্ষার ক্ষতি হচ্ছে ৷ তিনি অটো প্রমশনেরও উদ্যোগেরও সমালোচনা করেন৷
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আমেরিকা কিন্তু একটি পর্যায়ে স্কুল খুলে দিয়েছিল। তারপর তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। ইউরোপেও খুলে তা বন্ধ করে। কারণ সেখানে ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। আমরা স্কুল খোলার একটি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যখন করোনার প্রকোপ কমে গেলো শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তারপরে দেখলাম আবার ইউরোপে দেখা দিল। এই যে, ছেলেমেয়ে স্কুলে যাবে- বাচ্চারা বা তাদের গার্ডিয়ানরা, শিক্ষকরা৷ এটা একটি সংক্রামক ব্যাধি এখনো এটার চিকিৎসাই বের হয়নি। তারপরও আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। সেখানে আমরা ঝুঁকিটা ছেলে-মেয়েদের জন্য কেন নেবো? এটা ঠিক স্কুলে না যেতে পেরে বাচ্চাদেরও কষ্ট হচ্ছে। আজকাল তো সবাই সুখী পরিবার বানাতে গিয়ে একটা বাচ্চা দুটো বাচ্চা নিয়ে ঘরে এককভাবে থাকেন। আগে তো একান্নবর্তী পরিবার ছিলো, সকলে একসাথে থেকে চলতো। এখন তো সেই সুযোগটা নেই। যেজন্য বাচ্চাদের খুবই কষ্ট, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারপরেও তাদের তো মৃত্যুর ঝুঁকিতে আমরা ঠেলে দিতে পারি না। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
অটোপ্রমোশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে তো আগে সেমিস্টার সিস্টেম ছিলো না। আমরা সেমিস্টার সিস্টেম চালু করি। সেটাকে সারা বছর যে পরীক্ষ দিয়েছে তার ভিত্তিতে একটা ফলাফল আসবে। এটা তো ইংল্যান্ডেও দিয়েছে। এটা পৃথিবীর অনেকে দেশে দিয়েছে। এতে খুব বেশি একটা ক্ষতি হবে তা নয়। এরপর তারা স্কুলে যাবে। পরীক্ষ দেবে যারা টিকে থাকবে, থাকবে। সেই সুযোগটা তাদের আছে। কাজেই অটো প্রমোশনে এমন একটা খুব ক্ষতি হয়ে গেলো এমনটি নয়। একদিন বসে লিখে পাস করে , সেই পাসই পাস আর সারা বছর যে পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে যে রেজাস্ট, তা রেজাল্ট নয় এটা তো হতে পারে না। বরং সেইভাবে যদি সারা বছরের রেজাল্ট একসঙ্গে করে প্রমোশন দিয়ে দেওয়া যায় আমি তো মনে করি সেটা তাদের মেধার পরিচয়টা পাওয়া যায়। আরো ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০/আপডেট: ২৩২২ ঘণ্টা
এসকে/এএ/এএটি