ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কোপার্নিকাসকে সেন্ট মার্টিনসের মানচিত্র সংশোধনের অনুরোধ

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২০
কোপার্নিকাসকে সেন্ট মার্টিনসের মানচিত্র সংশোধনের অনুরোধ

ঢাকা: সেন্ট মার্টিনসকে মিয়ানমারের অংশ দেখিয়ে যে ভুল মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে, তা সংশোধনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠান কোপার্নিকাসকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বেলজিয়ামভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটিই ওই মানচিত্র প্রকাশ করেছিল।

 

অন্যদিকে সেই মানচিত্র সরকারি ওয়েব সাইটে প্রকাশ এবং আনুষাঙ্গিক বিষয়ে মিয়ানমারের কাছেও এ নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।  

তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মানচিত্রের ওই ভুল যেহেতু তারা করেনি, তাই এ বিষয়ে তাদের খুব বেশি করণীয় নেই। সরকারি ওয়েব সাইট থেকে ওই মানচিত্র তারা সরিয়ে নিয়েছে।  

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনস মিয়ানমারের অংশ দেখিয়ে মানচিত্র প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠান কোপানির্কাস। বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করে। কারণ দ্বীপটি কখনোই মিয়ানমারের অংশ ছিল না বা এ দ্বীপ নিয়ে দেশটির সঙ্গে কোনো বিরোধও নেই। তাই এ নিয়ে নড়ে চড়ে বসে বাংলাদেশ।  

গত সপ্তাহে ইউরোপের এই প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ জানায়, সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ মিয়ানমারের নয়, বাংলাদেশের। একইসঙ্গে মানচিত্রে সংশোধনের অনুরোধ জানানো হয়।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের মানচিত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করায় আমরা কোপানির্কাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে ভুল সংশোধন করতে অনুরোধ করেছি। ”

সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ নিজেদের অংশ দেখিয়ে উপস্থাপন করে আসছে মিয়ানমার। এ নিয়ে ঢাকা-নেপিদোর মধ্যে টানাপোড়েনও তৈরি হয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ছিলো। এই দ্বীপটি কখনো কোনোদিনই মিয়ানমারের মধ্যে ছিলো না। তবে দুই বছর আগে মিয়ানমার প্রথমবারের মতো মানচিত্রে তাদের দেশের ভূখণ্ডের মধ্যে দেখায়। এ নিয়ে ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর মিয়ানমারের তৎকালীন ঢাকার রাষ্ট্রদূত লু উইনকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে কঠোরভাবে বলে দেওয়া হয়, মিয়ানমারের মানচিত্র থেকে যেন সেন্ট মার্টিনস দ্বীপকে সরিয়ে ফেলা হয়। সে সময় মিয়ানমারের তিনটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে সে দেশের মানচিত্রের মধ্যে দেখানো হয়েছিলো।

সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের মানচিত্রের মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউকে আবারো তলব করা হয়। সে সময়ও মিয়ানমারকে ওয়েবসাইট থেকে মিথ্যা তথ্য সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। সে অনুযায়ী মিয়ানমার তাদের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ওই মানচিত্র সরিয়ে ফেলে।  

কিন্তু কোপার্নিকাস এখনও ওই ভুল তথ্য সংশোধন করেনি। বেলজিয়ামভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানের শ্লোগান ‘ইউরোপের চোখে বিশ্ব দেখা’। ইউরোপের জনসাধারণের কাছে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রভাব রয়েছে। সে কারণে তাদের মানচিত্র সংশোধনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে বারবার সেন্ট মার্টিনসকে মানচিত্রে মিয়ানমারের ভূখণ্ডের মধ্যে দেখানোয় দেশটির কোনো দূরভিসন্ধি রয়েছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশব্যাপী এ নিয়ে বিতর্কও আছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২০
টিআর/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।