ঢাকা: ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স’ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ায় বিশ্বজুড়ে সবার জন্য নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিকের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অন্যথায় বিশ্বকে করোনা মহামারির চেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিওবার্তায় ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’র ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা লভ্য অ্যান্টিবায়োটিকের (অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স) আওতার বাইরে চলে যাচ্ছি এবং শিগগিরই আরেকটি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার মুখে পড়তে হতে পারে, যেটি হবে বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারির চেয়েও মারাত্মক।

‘সন্দেহ নেই যে, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য একটি বিশ্বস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপজ্জনক খাদ্য উৎপাদন আমাদের বিপজ্জনক ফলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ’

জনগণের স্বাস্থ্য, প্রাণী ও নিরাপদ খাদ্য এবং ফসলের উৎপাদন ও পুরো পরিবেশের ঝুঁকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উদ্যোগের সহ-সভাপতি হিসেবে, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স সম্পর্কিত আন্তঃসংস্থা সমন্বয় গ্রুপের সুপারিশগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের পক্ষে সমর্থন, কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে সময়োপযোগী উদ্যোগটিকে সফল করার জন্যও বৈশ্বিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, ভুল ডোজ ও সামগ্রিকভাবে দুর্বল সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতার ফলে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আমাদের সবার নতুন প্রজন্মের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সাশ্রয়ীমূল্যে প্রাপ্যতাও নিশ্চিত করতে হবে।

শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন যে, এই নেতারা অ্যান্টিবায়োটিকের অশুভ বিকাশের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সংঘবদ্ধ লড়াইয়ের প্রচেষ্টায় অবদান রাখার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতাগুলোতে এই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়টিকে মূলধারায় রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট ২০১৭-২০২২’ এর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।

‘এএমআর মোকাবিলায় সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য এটি বাংলাদেশের প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল। ’

প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের জন্য আরও গবেষণায় আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় অংশীদারদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং পশু স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব সংস্থাকে (ওআইই) এই সমন্বিত গ্রুপটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল প্রতিরোধের গুরুতর সমস্যা সমাধানের জন্য সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগের জন্যও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

গ্রুপের সহ-সভাপতি বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি, সরকারি মন্ত্রী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ওআইই) পরিচালক, এবং বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের নেতারা ইভেন্টে যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২০
এএ