নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহাসড়কে পাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার (২২ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
গত বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত আসামি মো. আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন।
আড়াইহাজার থানার শিমুলতলায় পাওয়া তরুণীর মরদেহের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। নিহত তরুণীর নাম পাপিয়া বেগম (২০)।
শনিবার (২১ নভেম্বর) আসামি আরিফুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জানান, পাপিয়াকে হত্যা করেছেন তার ভাই সাম্মি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, আসামি আরিফুল ইসলামের সঙ্গে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এই সম্পর্ক পাপিয়ার ভাই সাম্মি (তৃতীয় লিঙ্গ) মেনে নিতে পারেননি। সাম্মি চাইতেন আরিফুল তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলুক। বিষয়টি পাপিয়া জানতে পারলে ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়।
গত ২৭ মে আরিফুল, পাপিয়া এবং তার ভাই সাম্মি তিনজনই পাপিয়ার বাসায় ছিলেন। ভাই-বোনের ঝগড়ার কারণে আরিফুল বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে বৃষ্টির কারণে যেতে না পারায় ওই ভবনের ২য় তলায় তার পরিচিত সামিয়ার বাড়িতে অবস্থান করেন।
পরে আরিফুল পাপিয়ার ঘরে গিয়ে তার মরদেহ বিছানার উপর দেখতে পান। এ সময় ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল এবং তার ভাই সাম্মি ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। আরিফুল ঘরের ভেতরে চলে আসায় সাম্মি আরিফুলকে বলেন—পাপিয়া বেঁচে আছে। পরে তারা একজন স্থানীয় ডাক্তারকে ডেকে এনে জানতে পারেন পাপিয়া মারা গেছেন। সাম্মির মাধ্যমে তার বাবা জয়নাল পাপিয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।
পরে পাপিয়ার বাবা জয়নালের পরামর্শে তার দুই ছেলে মামুন ও সাম্মি এবং আরিফুল মিলে পাপিয়ার মরদেহ ভৈরব ব্রিজ থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনামতো তারা সবাই মিলে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে পাপিয়ার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে রওয়ানা হন। পথে পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় তারা আড়াইহাজারের শিমুলতলায় রাস্তার পাশে জঙ্গলের ভেতরে পাপিয়ার মরদেহ ফেলে রেখে যান।
গত ২৮ মে আড়াইহাজারের শিমুলতলায় এক অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর মরদেহ পায় পুলিশ। অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় ২৯ মে একটি মামলা দায়ের হয়। প্রথমে মামলাটি পুলিশের কাছে তদন্তনাধীন থাকলেও পরে ২৩ জুলাই পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২০
এমজেএফ