নীলফামারী: রসুন বোনার ধুম পড়েছে। আগাম জাতের ধান কাটার পর সেই জমিতে লাগানো হচ্ছে রসুন।
নীলফামারীর সৈয়দপুরের শ্বাসকান্দর, বেংমারী, খানসামার ভুল্লির ডাংগা, কাচিনিয়া, প্ল্যান বাজার, হাসিমপুর, দুহুশুহ, গোয়ালডিহি এলাকাসহ সবখানে রসুন বোনার ধুম পড়েছে। কেউ রসুনের কোয়া খুলছেন, কেউবা জমি চাষ দিচ্ছেন আর কেউবা নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে রসুন বোনার কাজ তদারকি করছেন। কেউবা আগে বোনা রসুনে খড় বিছিয়ে দিচ্ছেন কেউবা পরিচর্যায় দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন।
কৃষক আব্দুস সালাম, সায়েদুল হক ও কবির উদ্দিন জানান, জমিতে আগাম জাতের ধান কেটে নিয়ে জমি তৈরি করে সেই জমিতে রসুন বোনা হচ্ছে। প্রতি মন বীজ রসুন ৪ হাজার টাকা মন দরে কিনেছেন তারা। এতে করে প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১০০ টাকা। জমিতে জৈব সার, রাসায়নিক সার পরিমাণ মতো প্রয়োগ করে রসুন বোনার কথা জানান তারা।
সরজমিনে দেখা যায়, নারী-পুরুষ দলবদ্ধভাবে রসুনের কোয়া জমিতে বপন করছেন। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা আর নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কোনো দলে ৩ জন কোনো দলে সর্বোচ্চ ৫০ জনের উপরে নারী-পুরুষ মিলে কাজ করছেন।
নারী শ্রমিক আহেলা খাতুন, সফুরন নেসা ও জয়মেনা বেগম জানান, পুরুষরাও কামলা দিতে বাড়ির বাইরে চলে যান সকাল সকাল। আমরা সংসারের অভাব দূর করার জন্য এসব কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। এর মধ্যে কারো স্বামী নেই, সংসারের হাল ধরার কেউ নেই তারাও দুটো পয়সার জন্য কাজে এসেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, এসব বোনা রসুন আগামী মাঘ-ফাগুন মাসে উঠতে শুরু করবে। এখানকার উৎপাদিত রসুন মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে স্থানীয় হাটগুলোতে ক্রেতারা আসেন। উৎপাদিত রসুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও পাঠানো হয়। এই রসুন আবাদ করে এলাকার কৃষকরা খুব উপকৃত হচ্ছেন।
কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ কেজি টিএসপি, ২৫ কেজি পটাশ ও ১৫ কেজি জিপসাম ছিটানোর দুই-এক দিনের মধ্যে নরম জমিতে সারিবদ্ধভাবে রসুন বীজ রোপণ করতে হয়। রোপণের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে দুই মণ রসুনের প্রয়োজন হয়। জমিতে রসুন রোপণের দিনই খড় বা বিচালি দিয়ে জমি ঢেকে দিতে হয়। বীজ রোপণের এক মাস পরে পানি সেচ দিয়ে বিঘায় ১০ কেজি হারে ইউরিয়া ও পাঁচ কেজি হারে এমওপি ছিটিয়ে দিলে ফলন ভালো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
এমএমএস