ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বামীর চিকিৎসার জন্য আকুতি নারী হ্যান্ডবল কোচ কবিতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
স্বামীর চিকিৎসার জন্য আকুতি নারী হ্যান্ডবল কোচ কবিতার কবিতা রানী মালো ও তার স্বামী। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: কবিতা রাণী মালো। মাদারীপুরের একজন নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক।

দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে দেশের জন্য খেলাধুলা করে আসছেন। বিজিএমসির নিয়মিত খেলোয়াড় এই কবিতা রাণী মালো। সম্প্রতি করোনা মহামারির সময়ে চাকরি হারিয়ে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে দূর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন।  

মৃত্যুশয্যায় থাকা স্বামীর চিকিৎসার খরচ যোগাতে না পেরে অসহায় দিন পার করছেন তিনি। ২৩ বছর ধরে দেশের জন্য হ্যান্ডবল খেলে আসছেন। নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক হিসেবে মেয়েদের খেলা শেখানো এই নারীর দুর্দিনে পাশে নেই কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি।  

তিন বেলা খাবার যোগাতে যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা, আর নিজের একটি কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন নারী এই হ্যান্ডবল কোচ।

জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে খেলাধুলা শুরু করেন মাদারীপুর শহরের কাঠপট্টি এলাকার কবিতা রাণী মালো। ২০০২ সালে বিজিএমসিতে খেলার সুযোগ পান নারী হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে। সেখান (বিজিএমসি) থেকে চলতি বছরেও খেলাধুলা করে প্রতিমাসে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন কবিতা রাণী। কিন্তু করোনা দুর্যোগে গত তিন মাস ধরে বন্ধ হয়ে গেছে খেলাধুলা। একইসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে তার সম্মানী ভাতাও।  

সম্মানী ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে যেখানে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে টিবি ও কিডনি রোগে আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসার খরচ কীভাবে যোগাবেন সেই চিন্তা কুড়েকুড়ে খাচ্ছে এই নারী খেলোয়ারকে। শো-কেস ভর্তি নানা সম্মাননা অর্জন আজ কোনো কাজেই আসছে না তার। যে মানুষটি পরিবার-পরিজন রেখে খেলাধুলা করে এতোকিছু করেছেন তার এই দুর্দিনে পাশে নেই কোনো সংগঠন। বর্তমানে স্বামীকে নিয়ে মাদারীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না কবিতা রাণী। সবার কাছে স্বামীর চিকিৎসার জন্য আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

মাদারীপুর হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী প্রশিক্ষক (কোচ) কবিতা রানী মালো জানান, দেশের জন্য খেলাধুলা করে ২০০২ সালে বিজিএমসি থেকে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় প্রথম হন তিনি। এছাড়া বেক্সিমকোতে পর পর ৪ বার চ্যাম্পিয়নশিপ লাভ করেন কবিতা। তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। পরিবারে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়ে রয়েছে। একদিকে সংসার খরচ ও অন্যদিকে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা দুটোই এখন কষ্টসাধ্য। এক্ষেত্রে সমাজের সবস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

সহযোগিতার জন্য: ব্যাংক হিসাব নম্বর: ২১১০৫০১০২০১৮৯, সোনালী ব্যাংক, মাদারীপুর শাখা। মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর: ০১৯১৬৬৫২৯৬৯-০, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার ও হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষকের মনোবল ধরে রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এক্ষেত্রে হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টার ও জেলা পুলিশ ইউনিট থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়া হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ড. রহিমা খাতুন বলেন, কবিতা রানী মালোর স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক ক্ষুদ্র পরিসরে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি চাইলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।