ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৮৫ কিলোমিটার নদী পাহারায় ৪৫ নৌ পুলিশ-দুই বোট

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
৮৫ কিলোমিটার নদী পাহারায় ৪৫ নৌ পুলিশ-দুই বোট ৮৫ কিলোমিটার নদী পাহারায় ৪৫ নৌ পুলিশ-দুই বোট। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদীর প্রায় ৮৫ কিলোমিটার অংশ পাহারায় নিয়োজিত আছেন তিন নৌ থানার ৪৫ জন পুলিশ। পদ সৃষ্টি না হওয়ায় পুরনো কাঠামোর জনবলেই কাজ করছেন।

তিনটি ফাঁড়ির জন্য বোট আছে দুটি। তবে এসব বোট ডাকাতদের বোটের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারে না। রাতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া নদীতে নামেন না এসব ফাঁড়ির পুলিশরা। এ সুযোগ নিয়ে জেলার এ অংশের নদীতে প্রায় সময় নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। কখনো কখনো দিনের বেলাও চলে যাত্রীবাহী লঞ্চে ডাকাতির ঘটনা। এমনকি অন্যত্র বোট নিয়ে এসে শহরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীতে নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা গ্রহণ ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগও বেশি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে নৌ-পুলিশ বলছে, নৌ ডাকাতির তৎপরতা কমেছে। জনবলের অভাব, লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবসহ বেশ কয়েকটি কারণে নদীতে কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে, তারা শিগগির চাহিদা পূরণ করবেন বলে জানিয়েছে।

চর আব্দুল্লাহ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে জানান, কালিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। বর্তমানে সাব ইন্সপেক্টর দুই জন, ইন্সপেক্টর একজন, কনস্টেবল নয় জন, এএসআই আছেন একজন। ফাঁড়ির জন্য স্পিডবোট আছে একটি। এ ফাঁড়ির আওতাধীন প্রায় ৪৫ কিলোমিটার নদীর অংশ চর আব্দুল্লাহপুর ফাঁড়ি দেখাশুনা করে থাকে। তবে মেঘনার অংশ বেশি। যার মধ্যে ২০ কিলোমিটার মেঘনা নদী, দিঘিরপাড় ১৫ কিলোমিটার, চিতলিয়া খালের ১০ কিলোমিটার অংশ দেখাশুনা করে। রাতের বেলা আপাতত টহল বন্ধ থাকে। নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া সেখানে যাওয়া হয় না।  

তিনি জানান, আমাদের অসুবিধার কথাগুলো জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন সমাধানের। মুক্তারপুর, গজারিয়া, চর আব্দুল্লাহপুর এ তিন নৌ ফাঁড়ি ৮৫ কিলোমিটার নদীর অংশ ৪৫ জন দেখে থাকেন।  

তিনি আরো জানান, চাঁদপুর সীমানাধীন ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। আমি এখানে যোগদান করার পর ২৭ জন নৌ ডাকাত চালান হয়েছে। নৌ ডাকাতদের চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও বর্তমানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। মাওয়া থেকে স্পিডবোট নিয়ে এখানে এসব ঘটনা ঘটায় একটি চক্র। তারা যাতে বোট ভাড়া নিতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  

মুক্তারপুর নৌ-পুলিশের ইনচার্জ কবির হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, এ ফাঁড়িতে জনবল আছে ১৬ জন। তবে পদ খালি নেই। বোট নেই এ ফাঁড়ির। প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশ দেখাশুনা করতে হয়। রাতে ও দিনে সারাক্ষণ নৌ অভিযান পরিচালিত হয়। যেসব ফাঁড়ির স্পিডবোট আছে এগুলো দুই ইঞ্জিন হলেও তাদের (ডাকাত) সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না। মতলব থেকে এসে আচমকা যেকোন ঘটনা ঘটিয়ে আবার চলে যায় ডাকাতরা। আর নৌ পুলিশের বোটগুলোর তেল খরচ ব্যয় বহুল।  
অনেক সময় নৌ ডাকাতের একটি গ্রুপ সদরের সীমানায় প্রবেশ করে। দুই সপ্তাহ আগেও নয়াগাঁও এলাকায় রাত তিনটার দিকে নৌ ডাকাতরা এসে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে টাকা নিয়ে গেছে।  

গজারিয়া নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আব্দুর সালাম বাংলানিউজকে জানান, ১৬ জন সদস্য আছে এ ফাঁড়িতে। একটি স্পিডবোট আছে। রাতেও টহল চলে। নির্দিষ্ট সময় অমান্য করে নদীতে বাল্কহেড চলাচল করছে কিনা এবং জাটকা নিধন, কারেন্ট জাল ব্যবহার হচ্ছে কিনা এই ব্যাপারগুলো দেখা হয়। নৌ ডাকাতি বন্ধে সাধ্যমতো চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
কেএআর/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।